দ্য ওয়াল ব্যুরো : সম্প্রতি এক নিরপেক্ষ তদন্তে জানা গিয়েছে, চিন যাতে না রেগে যায়, সেজন্য বিশ্ব ব্যাঙ্কের (World Bank) এক রিপোর্টে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছিল। একথা জানাজানি হতেই হইচই শুরু হয়েছে নানা মহলে। রিপোর্টে কোনওরকম কারচুপির কথা অস্বীকার করেছেন আইএমএফের প্রধান ক্রিস্টালিনা জিওর্জিয়েভা। ওই রিপোর্ট প্রকাশের সময় তিনি ছিলেন বিশ্ব ব্যাঙ্কের সিইও। ওই রিপোর্ট প্রকাশের পরেই সতর্ক হয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছে, রিপোর্টে কারচুপির অভিযোগ ওঠার পরে ২০১৮ ও ২০২০ সালের ‘ডুইং বিজনেস’ রিপোর্ট বাতিল করা হচ্ছে।
জিওর্জিয়েভা বুলগেরিয়ার নাগরিক। ২০১৯ সালে তিনি আইএমএফের দায়িত্বে আসেন। বিশ্ব ব্যাঙ্ক প্রতি বছর বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি তালিকা তৈরি করে। কোনও দেশে ব্যবসার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি কম, আর্থিক সংস্কার কতদূর এগিয়েছে, তা খতিয়ে দেখেন বিশ্ব ব্যাঙ্কের কর্মীরা। ওই তথ্যগুলির ভিত্তিতে কোনও দেশকে তালিকার ওপর দিকে বা নীচে স্থান দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের তালিকায় চিনের স্থান ছিল ৭৮ নম্বরে। তার পরের বছরের রিপোর্টে চিনের স্থান হয় আরও নীচে।
অভিযোগ, ২০১৮ সালের রিপোর্ট প্রকাশের কয়েক সপ্তাহ আগে বিশ্ব ব্যাঙ্কের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিম কিম এবং সিইও জর্জিয়েভা কর্মীদের নির্দেশ দেন, যে পদ্ধতিতে বিভিন্ন দেশের র্যাঙ্কিং করা হচ্ছে, তার পদ্ধতি বদলাতে হবে। এতে চিনের সুবিধা হয়। তালিকায় চিন ওপরে উঠে আসে।
নিরপেক্ষ তদন্তে জানা গিয়েছে, কিম একসময় চিনা প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। তাঁরা চিনের নিচু র্যাঙ্কিং নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। কী করলে র্যাঙ্কিং উঁচুতে উঠতে পারে তা নিয়েও তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়।
জর্জিয়েভা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি এই রিপোর্টের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত পোষণ করছি না। রিপোর্টে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে, বিশ্ব ব্যাঙ্কের তালিকায় কিছু অনিয়ম করা হয়েছিল। আমি তা মনে করি না।”
এই অভিযোগের ফলে জর্জিয়েভার সুনামের ক্ষতি হয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের একটি অংশ বহুদিন ধরে অভিযোগ করছিল, বিশ্ব ব্যাঙ্ক চিনের হয়ে কাজ করে। তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের পরে তাঁরা ফের সরব হয়েছেন। মার্কিন ট্রেজারি থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, “রিপোর্টে মারাত্মক তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। আমরা তথ্যগুলি খতিয়ে দেখছি।” আমেরিকার বক্তব্য, বিশ্ব ব্যাঙ্কের মতো একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যাতে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে, সেজন্যই আমরা চেষ্টা করব।
জর্জিয়েভা বলেন, তিনি আইএমএফের কাছে নিজের অবস্থান জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের কর্তারা শীঘ্রই বৈঠকে বসবেন।