মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী। গ্রাফিক্স- শুভ্র শর্ভিন।
শেষ আপডেট: 18th February 2025 22:48
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মঙ্গলবার বিধানসভার সিঁড়িতে গেরুয়া পাগড়ি পরে ধর্নায় বসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি বিধায়করা। তাঁদের পরণের টি শার্টে লেখা ছিল, ‘গর্বের সঙ্গে বলো আমি হিন্দু।’ এহেন কড়া পাকের হিন্দুত্বের রাজনীতি কৌশলগতভাবেই করছেন শুভেন্দুরা। এমনকি গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় পেশ হওয়া রাজ্য বাজেটকে 'মাদ্রাসা বাজেট' বলেও কটাক্ষ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা।
মঙ্গলবার বিধানসভায় বাজেট বিতর্কে অংশ নিয়ে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে তারই জবাব দিতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দুর নাম মুখে আনেননি মুখ্যমন্ত্রী। তবে ঠারেঠোরে তাঁকে উদ্দেশ করে বলেন, কতগুলো বক ধার্মিক এসে জুটেছে। আমাকে মুসলিম লিগ বলছেন। আমি কি বেলুন ফাঁস করব?
এখানেই না থেমে মুখ্যমন্ত্রীব কতকটা হুঁশিয়ারির স্বরে বলেন, “যাদের বিরুদ্ধে এত বাজে কথা বলছেন, তারা যদি একটা আন্দোলন এর ডাক দেয়, সামলাতে পারবেন তো?" মুখ্যমন্ত্রী মুসলিম শব্দটি বলেননি। তবে তিনি সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
শুভেন্দুরা এদিন বিধানসভার ভিতরে ঢোকেননি। তা ছাড়া স্পিকার তাঁকে সাসপেন্ড করে রেখেছেন। কিন্তু সভার বাইরে দাঁড়িয়ে এই বল লুফে নিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তিনি আবার বলেন, “ঠিক আছে, এই কথা নিয়েই আমি হাইকোর্টে মামলা করব। বিধানসভার মধ্যে দাঁড়িয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে একটা সম্প্রদায়কে লেলিয়ে দিচ্ছেন, আদালতও দেখুক”।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, বিধানসভা ভোট পর্যন্ত এই শঠে শাঠ্যং চলবে। কারণ, শুভেন্দুরা বুঝে গিয়েছেন, হিন্দু ভোটের আরও মেরুকরণ না ঘটলে তাঁরা ৪০ শতাংশ ভোটের বেড়া টপকাতে পারবেন না। আবার তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্ক সমৃদ্ধ রয়েছে সংখ্যালঘু ভোটে। সুতরাং দুই শিবিরের কৌশল ও স্বার্থ এখানে জলের মতই স্বচ্ছ।
এদিন বিধানসভায় সেই দুই ধারার রাজনীতির সমান্তরাল প্রবাহই দেখা যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "বক ধার্মিকদের কথায় আমি বাংলার মাটিকে অসম্মানিত হতে দেব না। বিষবৃক্ষ যেন বাংলায় তৈরি হতে না পারে। কারণ তা যদি হয় তাহলে ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাতে পারবেন না, খাবারদাবার বন্ধ করে দেবে।"
তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিন বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এ প্রসঙ্গে শুভেন্দুকে কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "উনি যে ধরনের প্ররোচনামূলক মন্তব্য করে চলেছেন তারপরও বাংলা শান্ত রয়েছে এটাই বড় কথা। এই ধরনের বিবৃতির জন্য মানুষের কাছে ওর ক্ষমা চাওয়া উচিত!"
পরে আবার এ বিষয়ে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, "আমাদের লড়াই কোনও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়, এটা একটা ন্যারেটিভ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। আমাদের লড়াই মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্য সরকার এবং তৃণমূল দলের বিরুদ্ধে।"