শেষ আপডেট: 9th November 2024 13:29
দ্য় ওয়াল ব্যুরো, হুগলি: ১৫ বছরের এক কিশোর এবার তৈরি করেছে চন্দননগরের বাগবাজারের জগদ্ধাত্রী প্রতিমা। আর এই প্রতিমা নিয়েই নেট নাগরিকদের সমালোচনার মুখে উদ্যোক্তারা। প্রতিমার রূপ নাকি নিখুঁত হয়নি। পুজো কমিটি অবশ্য সেই সমালোচনা উড়িয়ে দিয়েছে। দাবি করেছে, প্রতিবার তাঁর দাদু তৈরি করতেন বাগবাজারের প্রতিমা। এবার তিনি নেই। তাই ভার দেওয়া হয়েছে নাতিকে। ধীরে ধীরে পরিণত হবে সেও। জন্ম হবে আরেকজন ভাল শিল্পীর।
চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর অন্যতম প্রাচীন বারোয়ারি হল বাগবাজার সার্বজনীন। ১৯০ বছরের এই জগদ্ধাত্রী পুজোর ঐতিহ্যই হল বিশাল উচ্চতার প্রতিমা। সেই প্রতিমা আর তার সাজ দেখতে অপেক্ষায় থাকেন দর্শনার্থীরা। তবে এই বছর সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে বাগবাজারের প্রতিমা নিয়ে। যে আভিজাত্য বাগবাজার এত বছর ধরে এসেছে তাদের প্রতিমায় নাকি এবার তার প্রতিফলন নেই। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন অনেকেই।
তবে সোশ্যাল মিডিয়ার সমস্ত বিতর্ক উড়িয়ে দিয়ে বাগবাজার পুজো কমিটির দাবি তারাই একমাত্র পারেন এই কাজ করতে। কারণ এই বছর যে বাগবাজারের প্রতিমা বানিয়েছে তার বয়স মাত্র ১৫ বছর। চন্দননগর বঙ্গ বিদ্যালয় এর ক্লাস নাইনের ছাত্র অনিকেত পালের হাতে তৈরি হয়েছে এই বছরের বাগবাজারের প্রতিমা। পুজো উদ্যোক্তারা মনে করছেন ঠাকুরের মাপজোকে একটু ভুল হলেও ১৫ বছরের কিশোরের হাতে মায়ের মৃন্ময়ী রূপ দান হয়েছে। এই সাহসিকতার কাজ একমাত্র বাগবাজার সার্বজনীনই দেখাতে পারে। আর এভাবেই শিল্পী তৈরি হয়।
চন্দননগর ডুপ্লেক্স পট্টি পালপাড়ার দীর্ঘ দিন ধরে বাগবাজারের ঠাকুর তৈরি করতেন অনিকেতের দাদু। দাদুর মৃত্যুর পরে সেই দায়িত্ব এসে পড়ে নাতির কাঁধে। প্রথম বছর এত বড় ঠাকুর বানানোর দায়িত্ব কীভাবে সামলাবে একটু ভাবনায় পড়ে গিয়েছিল কিশোর শিল্পী। সে জানায়, প্রথমবার এত বড় ঠাকুর বানিয়েছে। বাগবাজারের ঠাকুরের মুখ ছাঁচে তৈরি হয় না। পুরো ঠাকুরটাই তার হাতে বানানো। প্রথম বছর উঁচু বাঁশের উপরে উঠে কাজ করতে গিয়ে ভয়ও লেগেছে বিস্তর। তবে সমস্ত ভয় কাটিয়ে সে ঠাকুর বানিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার যে সমালোচনা হচ্ছে সে কথাও কানে গিয়েছে অনিকেতের। তাঁর কথায়, "প্রথম বছর যা ভুলত্রুটি হয়েছে মানুষ যা বলছে তার থেকে শিক্ষা নিলাম। যাতে আগামী দিনে আরও সুন্দর করে কাজটা করতে পারি।"
পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা বলেন, "হয়ত মুখটা একটু বড় লাগছে। সবটা নিখুঁত হয়নি। দাদুর মতো পারেনি ছোট্ট নাতি। তবে এভাবে সুযোগ পেলে আগামীর বড় শিল্পী হবে সে। আর এই সাহস বাগবাজারই দেখাতে পারে।"