শেষ আপডেট: 31st August 2024 18:52
দ্য ওয়াল ব্যুরো, হুগলি: আরজি করের ঘটনার পর জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। পাল্টা সামাজিক মাধ্যমে পুলিশ কর্মীরাও সরব হয়েছেন। এমন যুদ্ধং দেহী আবহে অন্য ছবি আঁকলেন চন্দননগর পুলিশের কনস্টেবল সুকুমার উপাধ্যায়। সব ভুলে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ালেন আরও একবার।
চুঁচুড়া রথতলা বড়বাগানের বাসিন্দা গণপতি শূর। পরিবহন কর্মী ছিলেন। একটি দুর্ঘটনায় বাদ যায় তাঁর পা। তারপর থেকে কাঠের পা লাগিয়ে চলাফেরা করেন কোনওমতে। আয়ার কাজ করেন স্ত্রী। সেই আয়েই চলে সংসার। তাঁদের একমাত্র ছেলে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। চুঁচুড়া ডাফ স্কুলের ক্লাস নাইনের ছাত্র। চলাফেরা ও কথা বলায় সমস্যা থাকায় একা একা স্কুলে যেতে পারে না। গণপতিবাবু একটি ভ্যান রিক্সাকে ট্রাই সাইকেল বানিয়ে ছেলেকে স্কুলে দিয়ে আসেন রোজ। সেই সাইকেলটিও ভাঙাচোরা। কোনওভাবে দড়ি বেঁধে চলছিল কাজ।
একদিন স্কুলের পথে পুলিশ কর্মী সুকুমার উপাধ্যায়ের নজরে পড়ে যান তাঁরা। গণপতিকে হাফ প্যাডেল করে খুব কষ্টে সাইকেল টেনে নিয়ে যেতে দেখেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন সুকুমারবাবু। বাকি ছিল তা বাস্তবায়িত করা। রবিবার পয়লা সেপ্টেম্বর পুলিশ দিবস। তার আগে শুক্রবার একটি ব্যাটারি-চালিত ট্রাই সাইকেল তিনি তুলে দিলেন গণপতির হাতে। ব্যাটারি চালিত সাইকেল পেয়ে খুশি পিতা-পুত্র। এবার কষ্ট লাঘব হবে তাঁদের। গণপতি বলেন, "ছেলের প্রতিবন্ধী কার্ড আছে। কিন্তু কোনও ভাতা পায় না। সুকুমারবাবুর মতো ভালো পুলিশ কর্মী আছেন। তাঁদের জন্য আমাদের মতো মানুষরা উপকৃত হই।"
জানা গেছে, কয়েক মাস আগেই ছোটো খেজুরিয়ার এক প্রতিবন্ধী যুবক সেখ সাইফুদ্দিনের ব্যাটারি চালিত ট্রাই সাইকেল ও প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন সুকুমারবাবু। মাস দুয়েক আগে হঠাৎই মারা যান ওই যুবক। তাঁর বাড়িতে পড়েছিল নতুন ট্রাই সাইকেলটি। সেটি নিয়ে এসে এদিন গণপতি ও তাঁর ছেলেকে দেন ওই পুলিশ কর্মী। এর আগেও বহুবার অসহায় দরিদ্র মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।