শেষ আপডেট: 27th January 2025 12:23
মামিনুল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ
মুর্শিদাবাদের নওদা ব্লকের আমতলা গোপালপুর ঘাট রাজ্য সড়কের ধারে এই প্রাচীন কড়ই গাছে প্রায় হাজার তিনেক টিয়াপাখির বাস। এই প্রাচীন বৃক্ষের কোটরে কোটরে তাদের সাজানো সংসার। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তারা সেখানে খায়-দায় গান গায়। আর তাদের সুখে যাতে কেউ কাঁটা হতে না পারে তার জন্য আছেন সেলিম মিঞা। চাঁদ মিঞা নামেই তাঁকে চেনেন সবাই। সকাল হলেই লাঠি হাতে এই গাছের নীচে ঘুরে বেড়ান তিনি। কেউ একবার টিয়াদের সংসারে নজর দিলেই রে রে করে তেড়ে যান তিনি।
গভীর রাত পর্যন্ত ছাদে বসেই পাহারা দেন। চোরা শিকারিদের পাখি ধরার ফাঁদ ভাঙতে লাগোয়া খেতেও হানা দেন। এক দুবছর নয়। ২৫ বছর এভাবেই টিয়াদের পাহারাদার হয়ে বেঁচে আছেন সেলিম মিঞা। ঝাঁকে ঝাঁক টিয়া পাখি সকাল বেলায় উড়ে যায় আবার সন্ধ্যায় ফিরে আসে এই গাছে। এই টিয়া পাখি দেখতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন মানুষজন। তাদের নজর দেখেই চিনে নেন সেলিম মিঞা। খারাপ বুঝলেই নজরে রাখেন।
টিয়াপাখিগুলি যে বেজায় মহার্ঘ। তাই ঘুম আসে না চাঁদ মিঞার চোখে। তাঁর কথায়, এই গাছে ঝাঁকে ঝাঁকে টিয়ার বাসা। আর মানুষের লোভের দৃষ্টি পৌঁছবে না! ৫০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হয় এক একটি টিয়ার ছানা। তাই কোটরে নজর থাকে সর্বদা। মা-পাখিরা খাবারের খোঁজে গেলেই বাচ্চাদের চুরি করতে গাছে ওঠে চোরের দল। আমি সজাগ থাকি। তাই কেউ এগোতে পারে না। পাড়ার ছেলেছোকরা জুটিয়ে নিয়ে বাধা দেই।"
এরজন্য মাঝেমধ্যে পাখি চোরদের রোষের মুখেও পড়তে হয়। তিনি বলেন, "গালাগালি করে আমাকে। আমার গাছ কিনা জানতে চায়। শাসানি দেয়। কিন্তু ওসব কানে তুলি না আমি। আমাকে কিছু বললে এখন পাড়ার লোকরাও আমার পাশে দাঁড়ায়। এত পাখিকে তো আমাকেই দেখতে হবে।"