শেষ আপডেট: 5th March 2025 12:15
দেবাশিস গুছাইত
হাওড়া জেলার জগৎবল্লভপুর ব্লকের বড়গাছিয়া মেটাল ক্লাস্টার এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চল। এখানে ঘরে ঘরে প্রায় ১০ হাজার কারখানা। অসংখ্য শ্রমিক কাজ করেন সেখানে। মূলত লোহা, পিতল, অ্যালুমিনিয়াম প্রভৃতি ধাতুর জিনিসপত্র তৈরি করেন তাঁরা। কিন্তু নিয়মিত লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজের সমস্যায় এই শিল্পাঞ্চলের স্বাভাবিক কাজকর্ম বজায় রাখাই এখন রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিদিন কম করে দুই-আড়াই ঘণ্টা লোডশেডিং, লো ভোল্টেজের সমস্যা এবং অনিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহের কারণে কারখানাগুলোর উৎপাদন মারাত্মকভাবে মার খাচ্ছে। বরাত পাওয়া কাজ সময়ে শেষ করতে না পারায় পরবর্তী বরাত পেতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানালেন কারখানা মালিকরা। এমনই এক কারখানা মালিক শ্যামল ভুঁইয়া জানান, বাইরে থেকে বরাত নিয়ে আসেন তাঁরা। কিন্তু কখনই সময়ে সেই জিনিস সরবরাহ করতে পারছেন না। বিশ্বাসযোগ্যতা না থাকায় ব্যবসাতেও ক্ষতি হচ্ছে।
শুধু মালিকদের নয় লাগাতার লোডশেডিংয়ের জেরে দুর্ভোগ বাড়ছে শ্রমিকদেরও। এই শিল্পাঞ্চলে প্রায় এক লাখ শ্রমিক কাজ করেন, যাঁদের অধিকাংশই স্থানীয় বাসিন্দা। লোডশেডিংয়ের কারণে ঘণ্টা হিসাবে মজুরি পাওয়া শ্রমিকদের রোজগার কমে যাচ্ছে। হিমন খাঁ, সহদেব পালরা জানান, সবারই সংসারে একটা নির্দিষ্ট খরচ রয়েছে। কিন্তু এখানে তাঁদের নির্দিষ্ট আয় নেই। অনেকদিনই লোডশেডিংয়ের জন্য কাজ না করে বসে থাকতে হচ্ছে। তাই ঘণ্টা হিসেবে যত টাকা পাওয়ার কথা, সেটা পাচ্ছেন না। ফলে সংসার চালাতে ধারদেনা করতে হচ্ছে।
রাজ্য বিদ্যুৎ সংস্থার ডোমজুড় ডিভিশনের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার নির্মল মণ্ডল জানান, হাওড়া-আমতা রোড সম্প্রসারণের কারণেই লোডশেডিং হচ্ছে। রাস্তার ধারে থাকা বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর জন্য মাঝেমধ্যে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তবে তিনি দ্রুত এই সমস্যা সমাধান হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। কারখানা মালিকদের বক্তব্য, লোডশেডিংয়ের সময় ও কারণ সম্পর্কে আগেভাগে জানা থাকলে কিছুটা প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব। যতদিন এমন পরিস্থিতি চলে, ততদিন অন্তত এমন আগে থেকে তাঁদের জানানোর ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।