শেষ আপডেট: 29th May 2024 20:21
দ্য ওয়াল ব্যুরো, হুগলি: ছেলেবেলায় হুজুগে পড়ে একবার বন্ধুদের সঙ্গে তারকেশ্বর মন্দিরে গেছিলেন। এর পরে দেবাদিদেব মহাদেবের ভক্ত হয়ে যান। ইচ্ছে ছিল কেদারনাথ দর্শনে যাবেন। কিন্তু সকাল-বিকেল চায়ের দোকান চালিয়ে এত টাকা সঞ্চয় করা, তাঁর পক্ষ সম্ভব ছিল না। তাই সাইকেল চালিয়ে কেদারনাথের দর্শন বেরিয়েছিলেন চুঁচুড়ার কামারপাড়ার শুভ দাস। অবশেষ দর্শন সেরে বাড়ি ফিরলেন তিনি।
গত ১৪ এপ্রিল চুঁচুড়া গঙ্গা থেকে জল নিয়ে একটি সাইকেলে করে কেদারনাথের দিকে যাত্রা শুরু করেছিলেন শুভ। দীর্ঘ সফরে পথে নানান অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন তিনি। কখনও রাত কাটাতে হয়েছে ফাঁকা রাস্তায়, কখনও মন্দিরে। আবার অনেক সহৃদয় ব্যক্তি তাঁকে নিজের বাড়িতে থাকার জায়গা করে দিয়েছেন। এইভাবে প্রায় ১৫৬৬ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ২৬ দিন সাইকেল চালিয়ে গত ৯ মে কেদারনাথে পৌঁছে গেছিলেন ২২ বছরের এই তরুণ। সেখান থেকে ফেরার সময়ে গৌরীকুণ্ড থেকে জল নিয়ে এসে চুঁচুড়ার ষণ্ডেশ্বরতলা মন্দিরে পুজো দেন।
এখন শুভ ফিরেছেন সেই পুরনো জীবনে। কামারপাড়ায় টালিখোলার চালের বাড়িতে। বাবা-মাকে নিয়ে সেখানে তাঁর ছোট সংসার। কিন্তু কেদারনাথ দর্শনে তাঁর সেই দুর্ধষ যাত্রার স্মৃতি এখনও টাটকা। শুভ জানিয়েছেন, দু'বছর আগে লোন নিয়ে নিজের চায়ের দোকান চালু করেন। চুঁচুড়া ষণ্ডেশ্বরতলা মন্দিরের পাশে একটি ছোট্ট ঠেলাগাড়িতে রোজ চা বিক্রি করেন। চা, বিস্কুট, চিপস বিক্রি করে যতটা আয় হয়, তা সংসার খরচেই লেগে যায়। কিন্তু সেখান থেকেই কেদারনাথ যাবেন বলে অল্প অল্প করে টাকা জমিয়েছিলেন শুভ। তাঁর কথায়, " স্বপ্ন ছিল কেদারনাথ যাব, শেষ পর্যন্ত আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। একবার গেলাম, আগামীতে আবার যাওয়ার ইচ্ছে আছে।"
শুভর মা প্রতিমা দাস বলেন, " ছেলে ছোট থেকে শিব ভক্ত। কয়েক মাস আগে জন্ডিস হয়েছিল। তখন থেকেই কেদারনাথ যাওয়ার জেদ করছিল। আমরাও খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এতটা রাস্তা একা সাইকেল নিয়ে যাবে কীভাবে! মহাদেবের কৃপায় ভালোভাবে ফিরে এসেছে।"