শেষ আপডেট: 6th March 2025 15:08
দ্য ওয়াল ব্যুরো, হুগলি: রক্তদানে সেঞ্চুরি করে দেড়শোর পথে এগোচ্ছেন চন্দননগরের প্রশান্ত দাস। হাফ সেঞ্চুরি (Century) পার করে সেঞ্চুরির পথে বন্ধু (friend) অলক মণ্ডলও। দুজনের ঝুলিতেই অনেক পুরস্কার। দুই বন্ধু নিজেরা রক্ত দেন একে অপরকে উৎসাহ দিতে।
১৭ মার্চ ১৯৮৩, মাত্র আঠারো বছর বয়সে চন্দননগর (hoogly) খলিসানি কলেজে আয়োজিত রক্তদান শিবিরে প্রথমবার রক্ত দিতে গিয়ে সুচ দেখে কিছুটা ভয় পেয়েছিলেন চন্দননগরের বউবাজারের বাসিন্দা প্রশান্ত দাস। তবে সেটাই শেষ। গত ৫৭ বছর বয়সে ১৩৬ বার রক্ত দিয়ে ফেলেছেন। পেয়েছেন পাঁচটি জাতীয় ও সাতটি রাজ্যস্তরের পুরস্কার। এখনও যেখানেই রক্তদান শিবির হয় সেখানেই ছুটে যান।
২০০২ এর ১৯শে ডিসেম্বর সেবামূলক কাজের জন্য তৎকালীন রাজ্যপাল বীরেন জে শাহর কাছ থেকে "সেবা মেডেল" পুরস্কার পান তিনি ।রাজ্যের তরফে সেন্ট জন্স অ্যাম্বুলেন্স ব্রিগেড পুরস্কার পান। ২০০৫ সালে দিল্লির একটি সংস্থা গোল্ড মেডেল, সঙ্গে কুড়ি হাজার টাকার চেক প্রদান করে প্রশান্ত বাবুকে।সেই পুরস্কার কলকাতার গ্র্যান্ড হোটেলে তার হাতে তুলে দিয়েছিলেন তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধী। ২০২৪ সালে ওড়িশার সম্বলপুরে দেশরত্ন ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। পেয়েছেন বিরসা মুন্ডা অ্যাওয়ার্ড। ১০০ বার রক্ত দেওয়ার জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবন থেকেও পেয়েছেন পুরস্কার। ১৯৮০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত তার উদ্যোগে ৫০টি ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প করা হয়েছে,সেখানে মোট ৩৯ হাজার ৩০ জন রক্ত দিয়েছিলেন তার নথিও রয়েছে তার কাছে। বর্তমানে একাধিক ব্লাড ডোনেশন সংস্থার সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন প্রশান্ত। বললেন, "যতক্ষণ শরীর চলবে ততক্ষণ রক্ত দেব। আগামী দিনে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পদ্মশ্রী পুরস্কার পেলে আমার জীবন ধন্য হবে। মূলত নতুন প্রজন্মের জন্য এই কাজ করে যেতে চাই।"
কলেজে পড়ার সময় পরিচয় হয়েছিল বন্ধু অলককুমার মণ্ডলের সঙ্গে। তাঁর বাড়ি চন্দননগরের নাড়ুয়ায়। পিছিয়ে নেই তিনিও। ৫৭ বছর বয়সে ৭৭ বার রক্ত দিয়ে ফেলেছেন অলকবাবু। বর্তমানে দুজনেই চন্দননগর খলিসানি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেডে কর্মরত। প্রশান্তবাবু ম্যানেজার পদে রয়েছেন আর অলকবাবু ক্যাশিয়ার পদে চাকরি করেন। দুজনের ঝুলিতেই রয়েছে সোনা রূপোর একাধিক মেডেল।
অলোকবাবু বলেন, "একই সাথে কলেজে পড়াশোনা করেছি, এনএসএস ক্যাম্পে প্রশান্তর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত আমি ৭৭ বার রক্ত দিয়েছি। নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের একটাই বার্তা সকলে যেন রক্তদানে এগিয়ে আসে।"