শেষ আপডেট: 13th February 2025 16:28
দ্য ওয়াল ব্যুরো, হুগলি: চুঁচুড়া চকবাজারের বাসিন্দা স্নেহা হালদার হুগলি গার্লস স্কুলের ছাত্রী। বাড়ির কাছেই স্কুলে এতদিন পড়াশোনা তার। কিন্তু মাধ্যমিকের সিট পড়েছে শিক্ষামন্দির স্কুলে। বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে। কী ভাবে পরীক্ষা দিতে যাবে, ভাবনা ছিল। কারণ স্নেহার মা শিবানী বাবা মৃত্যুঞ্জয় হালদার দৃষ্টিহীন। ট্রেনে ভিক্ষা করেন। তাদেরই পথ চলতে মেয়ের সাহায্য নিতে হয়। তাই দুশ্চিন্তায় ছিলেন স্নেহার মা বাবাও। কিন্তু তখনই পাশে এসে দাঁড়ালেন পুলিশ কর্মী সুকুমার উপাধ্যায়।
সুকুমারবাবু চন্দননগর পুলিশের কনস্টেবল। দৃষ্টিহীনদের নিয়ে কাজ করার সুবাদে স্নেহার মা বাবার সঙ্গে তাঁর পরিচয়। স্নেহার মা সুকুমারবাবুকে ভাইফোঁটাও দেন। সেই পরিচয়েই তাকে মামা বলে ডাকে স্নেহা। সোমবার মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন প্রতিদিনই স্নেহাকে তিনিই বাইকে করে নিয়ে যাচ্ছেন পরীক্ষাকেন্দ্রে। ফিরিয়েও আনছেন।
স্নেহা জানায়, পরীক্ষায় ভালো ফল করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায় সে। মা-বাবার সহায় হতে চায়। ভাইকে বড় করতে চায়।যে কষ্ট তাদের জন্য মা বাবা করছেন তাদের জন্য কিছু করতেই হবে তাকে। সেই লক্ষে এগিয়ে যেতে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা ভালো করে দিতে চায়। যেটুকু বাধা এসেছিল পুলিশমামাই তা কাটিয়ে দিল। স্নেহার কথায়,‘‘পরীক্ষার আগের দিন আমাকে বাইকে করে স্কুল চিনিয়ে এনেছে পুলিশ মামা। যদি কোনওভাবে যেতে না পারে তার জন্য টোটোভাড়ার টাকাও গুছিয়ে দিয়ে গিয়েছিল আমার হাতে।’’ তবে অবশ্য টোটো করে আর যেতে হয়নি। প্রতিদিন নিজের বাইকে করে সন্তানের যত্নে স্নেহাকে তিনি পৌঁছে দিচ্ছেন স্কুলে। ফিরিয়েও আনছেন।
সুকুমারবাবু জানান, তাঁর পুলিশের চাকরি। তাই ইচ্ছে থাকলেও প্রতিদিন স্নেহাকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। কিন্তু তার এই কাজের কথা জানতে পেরে বড় কর্তাদের কথায় ডিপার্টমেন্টও পরীক্ষার সময়টুকু তাঁকে আর কোনও কাজ দিচ্ছে না। দিনের অন্য সময় অফিসের কাজ করছেন তিনি। পরীক্ষার দিনগুলিতে স্নেহাকে নিয়ে যাচ্ছেন পরীক্ষাকেন্দ্রে।