শেষ আপডেট: 6th January 2025 13:18
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অনেক ঝড়ঝাপটা সামলেও শেষরক্ষা হল না। যাত্রীর অভাবে শেষমেশ বাস বন্ধই করে দিলেন মালিক সুদীপ গোস্বামী। এই তিন নম্বর বাস রুটটি হুগলি জেলার লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত ছিল একসময়। শ্রীরামপুর রিষড়া কোন্নগর উত্তরপাড়া পেরিয়ে দক্ষিণেশ্বর হয়ে বাগবাজার শ্যামবাজার-- এই ছিল রুট। উত্তর কলকাতা যাওয়ার একমাত্র সহজ অবলম্বন ছিল এই তিন নম্বর বাস।
কখনও চালক কখনও কন্ডাক্টর হয়ে নিজেই বাস চালিয়ে নিয়ে গেছেন সুদীপবাবু। কিন্তু যাত্রী কমলেও লাফিয়ে বেড়েছে তেলের খরচ, বাসের মেন্টেন্যান্স। কিন্তু আয়ের অঙ্ক তো দূর, রোজের খরচই উঠত না। কারণ বর্তমানে বাসের থেকে অটো বা টোটোয় চাপতে যাত্রীরা বেশি পছন্দ করেন।
সুদীপবাবুর স্বপ্ন ছিল অন্তত ১০০ বছর এই বাসের রুটকে বাঁচিয়ে রাখা। তবে সেঞ্চুরির আগে ৯৭ তেই শেষ হল তাঁর লড়াই। তিনি জানান, ‘টোট-অটোর দৌরাত্ম্য বেড়েছে। সে কারণেই যাত্রী সংখ্যা আশ্চর্যজনকভাবে কমতে শুরু করে। এক এক সময় তেল খরচটুকুও উঠত না। শুধুমাত্র রুটটাকে ভালবেসেই এতদিন টেনে নিয়ে গেছি। মানুষ না চাইলে একা টানা সম্ভব নয়। আমি পাঁচ বছর একা টানলাম। গাড়ির বয়সও বাড়ছে। সে কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হই।’
তবে গত পাঁচ বছর ধরে যাত্রা পথ ছোটো করে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত চলছিল বাসটি। এবার তাও বন্ধ হল। জানা যায়, ১৯২৭ সালে শ্রীরামপুরের থেকে কলকাতা যাওয়ার জন্য পথচলা শুরু হয় তিন নম্বর বাসের। হুগলি হাওড়া উত্তর ২৪ পরগনা কলকাতা চারটি জেলাকে সংযোগ করেছিল এই বাস। এক সময় অনেক বাস ছিল এই রুটে। পরবর্তীতে ছবিটা বদলে যায় পুরোপুরি।
বাস ইউনিয়নের নেতা দুলাল দেবনাথও পরিষ্কার জানিয়েছেন, টোটোর বাড়বাড়ন্তের কারণেই এমন অবস্থা। তিনি বলেন, ‘সরকারকে সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে। বাস রুটে যদি টোটো চলে তাহলে এমনই অবস্থা হবে। সবকিছু সরকার খাতায় কলমে করলেও বাস্তবে কিছুই হচ্ছে না।’
সুদীপবাবু জানালেন, বাসে তালা লাগানোর পর এখন আবার নতুন জীবিকার খোঁজ করতে হবে তাঁকে। সংসারের চাকাটা সচল রাখতে হবে যে।