শেষ আপডেট: 31 December 2024 13:02
দ্য় ওয়াল ব্যুরো, হুগলি: ৭২ বছর বয়সে ঘুরতে ঘুরতে চলে যান ক্যানিং বনগাঁ কৃষ্ণনগর বেথুয়াডহরী। আবার কখনও বর্ধমান বা হুগলি। গলায় স্টেথোস্কোপ। হাতে রক্তচাপ মাপার যন্ত্র আর পালস অক্সিমিটার। মানুষের রক্তচাপ মেপে বেড়ান মলয় বসু। উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরের বাসিন্দা মলয়বাবু বর্তমানে ব্যারাকপুরে থাকেন। হুগলি সদর চুঁচুড়ায় মাঝে মধ্যেই দেখা যায় তাকে স্টেথোস্কোপ নিয়ে ঘুরতে।
বাজার এলাকায় ঘুরে ঘুরে ব্যবসায়ীদের প্রেশার মেপে দেন তিনি। সঙ্গে থাকা পালস অক্সিমিটারে পালস রেট আর রক্তে অক্সিজেনের মাত্রাও মেপে দেন। প্রেশার মাপতে নেন ১০ টাকা আর অন্য দুই পরিষেবার জন্য তাঁর দর্শনী ৫ টাকা। বাজারের পথে মলয়বাবুকে দেখতে পেলে কে কার আগে ডাকবেন ব্যবসায়ীদের মধ্য়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, অনেক সময় কাজের চাপে ডাক্তারের কাছে বা ওষুধের দোকানে গিয়ে প্রেসার মাপা হয়ে ওঠে না। কিন্তু ব্লাড প্রেসার নিয়মিত মাপা ভাল সেটা মলয়বাবু মাঝেমধ্যে আসায় বুঝতে পারেন তাঁরা। তাই মলয়বাবু এলে সেই কাজটি করে ফেলেন।
নেভিতে ছিলেন মলয়বাবু। সেখানে চাকরির সুবাদে ফিজিওথেরাপি এবং নার্সিং ট্রেনিং নিয়েছিলেন। পনেরো বছর চাকরি করে ১৯৮৮ সালে অবসর নেন। তারপর সৌদি আরবে কয়েক বছর চাকরি করেন। গত দশ বছর ঘুরে ঘুরে মানুষের ব্লাড প্রেসার মেপে বেড়াচ্ছেন। দশ টাকা নেন প্রেসার মাপতে। তার সঙ্গে পাঁচ টাকায় পালস অক্সিমিটারে অক্সিজেন স্যাচুরেশান মাপেন।
মলয়বাবু বলেন, "রক্তচাপ কমা বাড়া হলে শারীরিক অসুস্থতা বোঝা যায়। সেই বিষয়টা অনেকেই অবহেলা করেন। আমি ঘুরে ঘুরে সেই কাজটা করি। প্রেসার কম বেশি দেখলে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেই।" দিনে পাঁচ ছয় ঘণ্টা কাজ করে পঞ্চাশ ষাট জনের প্রেসার মাপেন তিনি।
তিনি জানান, পেনশান পান। তবু এই কাজ করেন। কারণ চলাফেরার মধ্য়ে থাকলে শরীর ভাল থাকে। আবার মানুষকে শরীর স্বাস্থ্য সম্বন্ধে সচেতন করতে পারেন। শ্রমজীবী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে তাঁর। যা আয় করেন তার তিন ভাগের দুই ভাগ দান করেন শ্রমজীবী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।