শেষ আপডেট: 27th February 2025 15:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অনলাইন পদ্ধতিতে ভোটার লিস্টে নাম তোলার সুযোগ নিয়ে, কমিশনকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি ভোটার লিস্টে ভূতুড়ে ভোটার ঢুকিয়ে দিচ্ছে বলে আগেই অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পদ্ধতিতেই পদ্ম শিবির মহারাষ্ট্র, দিল্লি দখল করেছে বলেও দাবি করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী।
এবার নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে দলের নেতা, কর্মীদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোঝালেন, অনলাইনে ঠিক কীভাবে জালিয়াতি করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে রীতিমতো তথ্যপ্রমাণ তুলে ধরার পাশাপাশি, পাখি পড়ানোর মতো দলের নেতা-কর্মীদের 'টাস্ক'ও বেঁধে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বলেন, "কমিশনের আশীর্বাদ নিয়ে দিল্লি, মহারাষ্ট্রের মতো বাংলাতেও ফিল্ড সার্ভে না করে এআরও-র সাহায্যে অপারেটরদের কাজে লাগিয়ে অনলাইনে ভূতুড়ে ভোটারদের নাম তোলা হচ্ছে। বাংলার ভোটারের একই এপিক কার্ডে হরিয়ানা, গুজরাতের লোকের নাম তুলছে।"
ভোটার লিস্টে বিজেপির ভূতুড়ে কারসাজি কীভাবে জানলেন মমতা? নেপথ্যে কোন সোর্স? রহস্য ফাঁস করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, "আমাদের রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ প্রথম আমাকে এ বিষয়ে সতর্ক করেছিল। তারপরই খোঁজ নিতে গিয়ে সবটা জানতে পারি।"
মঞ্চে বেশ কিছু নথি তুলে ধরে কর্মীদের উদ্দেশে তৃণমূল নেত্রী বলেন, এই যেমন মুর্শিদাবাদের রানিনগরের মহম্মদ সহিদুল ইসলামের সঙ্গে কানেক্ট করেছে হরিয়ানার সনিয়া দেবীর নাম। একইভাবে হরিয়ানার মঞ্জিতের সঙ্গে বাংলার রানিনগরের মহম্মদ আলি হোসেনের একই এপিক নম্বর।
একই এপিক নম্বরে দু’জনের নাম কীভাবে সম্ভব? তৃণমূল নেত্রীর দাবি, "কমিশনের আশীর্বাদ নিয়ে দিল্লির ইলেকশন কমিশন অফিসে বসে আধার কার্ড কেলেঙ্কারি করে একই এপিক নম্বরে বাংলার ভোটারের নামের সঙ্গে রাজস্থান, বিহার, হরিয়ানার ভোটারের নাম যুক্ত করা হচ্ছে।"
প্রায় প্রতিটি বিধানসভাতেই এভাবে ২০ থেকে ৩০ হাজার ভূতুড়ে ভোটার ঢোকানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, "বাংলা বহিরাগতদের সম্মান করতে জানে। কিন্তু বহিরাগতদের বাংলা দখল করতে দেব না। এটা বাংলা দখলের খেলা। এই খেলায় জিততে আর একটা গণ জাগরণ হবে প্রয়োজনে।"
ভোটার লিস্ট খতিয়ে দেখার জন্য এদিনই রাজ্য কমিটি গড়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। হুঁশিয়ারির সুরে কর্মীদের উদ্দেশ্যে মমতা এও বলেন, "শুধু বিজেপিকে গালমন্দ করবেন আর নিজে কোনও কাজ করবেন না। আমি খবর নেব, কারা কাজটা ঠিকভাবে করলেন, কারা করলেন না। যারা ভালভাবে ভোটার লিস্টের কাজ করবেন দল তাদের যেমন সম্মানিত করবে তেমনই কারা দায় এড়ালেন সেটাও নজরে থাকবে। ভোটার লিস্ট ধরে ধরে কাজ করতে হবে। ৩ দিন অন্তর পার্টি অফিসে ইনফরমেশন পাঠাতে হবে।"
একুশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের জনপ্রিয় স্লোগান হয়ে উঠেছিল, 'খেলা হবে'। ২৬ এ ভোটার লিস্টকে সামনে রেখে আরও বড় খেলার ডাক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, "২৬-এর খেলাটা আর একটু জোরে খেলতে হবে, সেই কাজটা শুরু হবে ভোটার লিস্ট থেকে, চু কিত কিত খেলাও হবে! কারণ, আমরা ওদের ষড়যন্ত্র ধরে ফেলেছি।"
একই সঙ্গে বাংলার মানুষের উদ্দেশে তৃণমূল নেত্রী বলেন, "মানুষকে বলব আপনারাও ভোটার লিস্টে নিজেদের নামটা ঠিক আছে কিনা দেখে নিন। ওদের লক্ষ্য দুটো। এক, ভূতুড়ে ভোটার ঢুকিয়ে তৃণমূলকে হারানো, দুই, বাংলার মানুষকে ছাঁটাই করে দেওয়া।"
কর্মীদের মনে করিয়েছেন, শুধু ভোটার লিস্ট চেক করলেই হবে না, ব্লক বা জেলায় নির্বাচন দফতরের কোন কোন আধিকারিক এই জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত সেটাও খোঁজ নিতে হবে। জানতে হবে মিষ্টির প্যাকেটের বিনিময়ে কারা এই কাজগুলো করছে।