শেষ আপডেট: 8th May 2023 11:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিজেপি (BJP) বিরোধী জোট নিয়ে রীতিমতো উপহাস করলেন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah ridiculed the anti-BJP alliance)। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলিকে এক ছাতার তলায় আনার চেষ্টা শুরু করেছে কংগ্রেস। সংসদে বাজেট অধিবেশনে বিজেপি বিরোধী ১৮টি দল একযোগে সরকারের বিরোধিতায় শামিল হয়। এখন চেষ্টা চলছে সংসদের বাইরেও এই বোঝাপড়া গড়ে তোলার। আগামী পরশু বুধবার কর্নাটক বিধানসভার ভোট (Karnataka Election)। তারপরই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার পাটনায় অবিজেপি দলগুলির কনক্লেভের আয়োজন করতে চলেছেন। নীতীশের সেই উদ্যোগের অন্যতম প্রস্তাবক হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে অবিজেপি দলগুলির বোঝাপড়া তৈরির এই চেষ্টা নিয়ে রীতিমতো উপহাস করেছেন অমিত শাহ। তাঁর বক্তব্য, ‘কাল যদি মমতাজি ইউপি-তে (UP) সভা করতে যান, ক’টা লোক তাঁর কথা শুনতে যাবেন বলতে পারেন।’ শাহ আরও বলেন, ‘মমতাজির সেই সভা থেকে অখিলেশ যাদবের কী লাভ হবে?’ আরও বলেন, ‘তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর কী লাভ হবে যদি তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কেজিআরজি তাঁর রাজ্যে প্রচারে যান। কর্নাটকে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী গিয়ে কংগ্রেসের হয়ে প্রচার করলেই কি লোকে হাত চিহ্নে ভোট দেবে?’
একটি সর্বভারতীয় ইংরিজি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাতীয় রাজনীতির নানা বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছেন অমিত। রবিবার পর্যন্ত তিনি ব্যস্ত ছিলেন কর্নাটকে বিধানসভা ভোটের প্রচারে। সেখানে একের পর এক সভায় কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে প্রধান বিরোধী দলের সঙ্গে আঞ্চলিক দলগুলির বোঝাপড়ার চেষ্টার বিরুদ্ধে বারে বারে সরব হন এই বিজেপি নেতা। সাক্ষাৎকারেও সেই প্রসঙ্গে বিরোধী জোটের সম্ভাবনা ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘নেতারা এক ছাতার তলায় এলেই ভোটাররা তাঁদের দলে ভিড়ে যাবেন না। এতে বড়জোর মিডিয়ার জন্য একটা ভাল গ্রুপ ছবি হতে পারে। নেতারা যা দেখে খুশি হবেন। এর চাইতে বেশি কিছু হওয়া কঠিন।’
কর্নাটক নিয়ে অমিতের দাবি, ‘নির্বাচনী সমীক্ষা যাই বলুক, বিজেপি সেখানে ক্ষমতায় থাকছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যার তুলনায় ১৫টি আসন বিজেপি বেশি পাবে,’ দাবি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।
শাহ গত দিন সাতেক টানা কর্নাটকে ছিলেন। সেখান থেকেই ফোনে ফোনে মণিপুর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন, ব্যবস্থা নেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও গত শুক্র-শনি-রবি কর্নাটকে ছিলেন। মণিপুর যখন জ্বলছে তখন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভোটের প্রচারে মগ্ন থাকা নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়েছে। সমালোচনায় কর্ণপাত না করে গোটা রাজ্যে প্রচার চালান মোদী-শাহ জুটি। ফলে ভোটের আগেই আলোচনা শুরু হয়েছে কর্নাটকে হার-জিতের সঙ্গে মোদী-শাহের ভাগ্য জুড়ে গিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, রাজ্য সরকার ব্যর্থ বলেই কি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তো সব রাজ্যেই বিধানসভা ভোটে সামনের সারিতে থাকছেন।
জবাবে শাহ বলেন, মনমোহন সিং জনসভায় ভাষণ দিতে অভ্যস্থ ছিলেন না। তিনি দশ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে নির্বাচনী সভায় অনুপস্থিত ছিলেন। কিন্তু ইন্দিরাজি, রাজীবজি, অটলজিরা বিধানসভা ভোটের প্রচারে যেতেন। মোদীজিই প্রথম যাচ্ছেন বলে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে।
শাহের দাবি, শুধু কর্নাটক নয়, দক্ষিণের বাকি রাজ্যগুলিতেও তাঁরা দ্রুত অগ্রসর হচ্ছেন। তাঁর কথায়, অদূর ভবিষ্যতেই দাক্ষিণাত্য উত্তর-পূর্ব ভারত হয়ে উঠবে। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে কয়েক বছর আগেও বিজেপির চিহ্ন মাত্র ছিল না। এখন অসম-সহ একাধিক রাজ্যে দল ক্ষমতায় এবং সব রাজ্যেই ভাল শক্তি আছে।