শেষ আপডেট: 26th September 2024 17:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পুজোর মুখে রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার কী কী পদক্ষেপ নিল এবার তা জানতে আগ্রহী কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যের থেকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। মূলত তিন জেলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের রিপোর্ট তলব করেছে আদালত।
প্রথম থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করে এসেছেন, এটা ‘ম্যান মেড বন্যা’। তাঁর নিশানায় রয়েছে ডিভিসি। মমতার অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে জল ছেড়ে বাংলাকে ডোবানো হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণও ঘোষণা করেছেন তিনি। তবে তিন জেলার জন্য আলাদা করে রিপোর্ট চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মামলা করেছিলেন এক আইনজীবী। তার প্রেক্ষিতেই পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি এবং হাওড়ার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কী পদক্ষেপ করা হয়েছে তা সরকারের থেকে জানতে চায় আদালত। আগামী ৩ অক্টোবর এই রিপোর্ট জমা করতে হবে।
গত মঙ্গলবার বীরভূমে প্রশাসনিক বৈঠক করার পর মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বন্যার কবলে পড়ে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করবে সরকার। পাশাপাশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িও তৈরি করে দেবে রাজ্য। অন্তত ১১ লক্ষ বাড়ি তৈরি করা হবে। তিনি এও নির্দেশ দিয়েছেন, গ্রামীণ অঞ্চলের রাস্তা যা ভেঙে গেছে, তা সারাইয়ের জন্য বরাদ্দ টাকা সম্পূর্ণ খরচ করতে হবে বিধায়কদের। সাংসদ খাতের এক কোটি টাকা স্কুল মেরামতি, আর চার কোটি টাকা রাস্তা মেরামতিতে খরচ হবে, জানান মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকেও বিঁধতে ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্র ভোটের জন্য যে টাকা খরচ করে, তার ১ শতাংশ যদি রাজ্যকে দিত তাহলে এমন পরিস্থিতি সামলাতে সুবিধা হত, এমন মন্তব্য ছিল তাঁর। যদিও টাকা না পেলেও সাধ্যমতো রাজ্য সরকার আর্থিক সাহায্য করবে বলেই আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। মমতা সংবাদমাধ্যমে ডিভিসিকে নিশানা করে এও দাবি করেন, ২০০৯ সালের পর এত জল এর আগে ছাড়া হয়নি। ঝাড়খণ্ডকে বাঁচাতে বাংলাকে ডোবানোর চেষ্টা হয়েছে বলেই অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে সব মিলিয়ে ৩৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। তার মধ্যে মাইথন থেকে ৩০ ও পাঞ্চেত থেকে ৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। মঙ্গলবার জল ছাড়ার পরিমাণ আরও কমানো হয়। বুধবারও দুটি জলাধার থেকে সবমিলিয়ে ২৬ হাজার ৫০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। কিন্তু লাগাতার ভারী বৃষ্টি চলায় পরিস্থিতি কোনদিকে যাবে সেটাই এখন দেখার।