সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দারস্থ হয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা।
কলকাতা হাইকোর্ট
শেষ আপডেট: 20 May 2025 14:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: 'সুপার নিউমেরিক পোস্ট' (Super Numeric Post) মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের অন্তর্বতী স্থগিতাদেশের নির্দেশ বহাল রাখল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ (Calcutta High Court)। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দারস্থ হয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। সেই মামলাতেই বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দের ডিভিশন বেঞ্চের (Division Bench) নির্দেশ, আপাতত কোনও নিয়োগ করা যাবে না।
গত ৭ মে হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বেঞ্চ এই পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ দেয়। পরিষ্কার বলা হয়, অতিরিক্ত শূন্যপদে এখনই কোনও নিয়োগ করা যাবে না। মঙ্গলবার সেই নির্দেশে কোনও হস্তক্ষেপ করল না ডিভিশন বেঞ্চ।
শারীর শিক্ষা এবং কর্মশিক্ষার বিষয়ে অতিরিক্ত শূন্যপদ মামলায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য সরকার (State Govt)। অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির কারণ ঠিক কী ছিল তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ এই ইস্যুতে রাজ্যের লিখিত তথ্যও চেয়েছিল। পরবর্তী সময়ে, নিয়োগে স্থগিতাদেশের নির্দেশের পর সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যান চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ।
মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি সৌমেন সেন প্রশ্ন তোলেন, 'যদি আমরা শেষে দেখতে পাই যে রাজ্য সুপার নিউমারিক পোস্ট করতেই পারে না, তাহলে স্থগিতাদেশ তুলে দিয়ে কী লাভ?' আগামী ১৮ জুন এই মামলার শুনানি রয়েছে সিঙ্গল বেঞ্চে। নিয়োগ হওয়ার পর যদি সেই পদের বৈধতাই না থাকে তাহলে ফের নতুন সমস্যা হবে, এমনই মন্তব্য বিচারপতি সেনের।
এদিকে মামলাকারীর আইনজীবী পার্থ সারথী সেনগুপ্তর কথায়, দু'বছর ধরে চাকরিপ্রার্থীরা অপেক্ষায় বসে আছে। অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ থাকতে পারে কী পারে না, সেই মূল প্রশ্ন। এক্ষেত্রে তাঁর যুক্তি, সুপার নিউমারিক পোস্ট তৈরি হয়েছিল মন্ত্রিসভার অনুমতি নিয়ে। আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য আবার পাল্টা বলেন, যারা মামলা করেছেন তারাই পাশ করেননি! অন্যদিকে, আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, মামলার সাংবিধানিক অধিকার আছে কিনা, সেটাই বড় প্রশ্ন।
এসএসসি-র মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রায় ছ’হাজার অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় এবং রাজ্য মন্ত্রিসভারও অনুমোদন ছিল ওই সিদ্ধান্তে। তবে কলকাতা হাইকোর্ট প্রথমে বলেছিল, ওই অতিরিক্ত শূন্যপদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত আইনসঙ্গত নয়। এমনকী প্রয়োজনে সেই সিদ্ধান্তে যুক্ত মন্ত্রিসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে সিবিআই।
তবে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা গেলে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ কলকাতা হাইকোর্টের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দেয়। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত নিয়ে সিবিআই তদন্ত চালানো যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত হানে। পাশাপাশি, অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি বেআইনি নয়। রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন সাপেক্ষে শিক্ষা দফতর বা এসএসসি এই ধরনের পদ সৃষ্টি করতেই পারে।