অপারেশন নীলম ভ্যালি: কীভাবে পাক জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দিল ভারতীয় সেনা
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পাক সেনাদের সক্রিয় সহযোগিতায় সীমান্তের ওপারে অস্থায়ী জঙ্গি ঘাঁটি তৈরি করে অনুপ্রবেশের ঘুঁটি সাজাচ্ছে পাক জঙ্গিরা, ভারতীয় সেনার কাছে এই খবর পৌঁছে গিয়েছিল বহু আগেই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ছাড়াও উপগ্রহ চিত্রে সীমান্তের ওপা
শেষ আপডেট: 21 October 2019 13:00
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পাক সেনাদের সক্রিয় সহযোগিতায় সীমান্তের ওপারে অস্থায়ী জঙ্গি ঘাঁটি তৈরি করে অনুপ্রবেশের ঘুঁটি সাজাচ্ছে পাক জঙ্গিরা, ভারতীয় সেনার কাছে এই খবর পৌঁছে গিয়েছিল বহু আগেই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ছাড়াও উপগ্রহ চিত্রে সীমান্তের ওপারে জঙ্গি ঘাঁটির অবস্থান ধরা পড়েছিল। পাক সেনা ও জঙ্গিদের গতিবিধির উপর নজরও রাখছিল ভারতীয় সেনারা। ফের অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে আচমকাই হামলা চালাতে পারে পাকিস্তান তার আঁচ পেয়েই সার্জিকাল স্ট্রাইকের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল ভারতীয় সেনা। সম্প্রতি সেনা সূত্রেই জানানো হয়েছে এই খবর।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি আগেভাগেই সতর্কবার্তা দিয়েছিল, গত তিন মাস ধরে একটু একটু করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে জঙ্গি ঘাঁটিগুলোকে। আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ও ইজরায়েলি বোমা নিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছে জঙ্গিরা। এই হামলা না রুখলে, জঙ্গিদের স্লিপার সেল হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়বে গোটা উপত্যকায়। উরির সেনা ঘাঁটি ও পুলওয়ামায় আধাসেনার উপরে হামলার জবাবে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতীয় সেনার এয়ারস্ট্রাইক ইদানীং কালের ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রত্যাঘাত। আরও একবার পাকিস্তানকে সপাটে জবাব দেওয়ার জন্য আঁটঘাট বেঁধেই রেখেছিল ভারতীয় বাহিনী।
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার ভোররাত থেকে। জম্মুর কাঠুয়ায় মনইয়ারি-চোরগলি এলাকা লক্ষ্য করে পাক রেঞ্জার্স মর্টার ছুড়লে আহত হন সাদিক আলি নামে এক ব্যক্তি। পরবর্তী নিশানা ছিল কুপওয়ারার টংধার সেক্টর। বিনা প্ররোচনায় সেখানে গোলাবর্ষণ শুরু করে পাক বাহিনী। পাক হামলায় নিহত হন পদমবাহাদুর শ্রেষ্ঠ ও জামিলকুমার শ্রেষ্ঠ নামে দুই সেনা। মৃত্যু হয় মহম্মদ সিদিক নামে টংধার এলাকার এক গ্রামবাসীরও। সেনা সূত্র জানিয়েছে, এইভাবে আচমকা হামলা পাক বাহিনীর বহু পুরনো পদ্ধতি। ভারতীয় সেনাদের এনকাউন্টারে ব্যস্ত রেখে জঙ্গিদের সীমান্ত পার করিয়ে দেওয়াই এই হামলার উদ্দেশ্য। আগেও বহুবার একই পদ্ধতিতে ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে পাক সেনারা।
বস্তুত, পাক বাহিনীর এ বারের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। কারণ আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল ভারতীয় সেনা। পাক রেঞ্জার্স মর্টারের জবাবে টংধার সেক্টরের ওপারে নীলম ভ্যালিতে জঙ্গিদের লঞ্চ প্যাডগুলি লক্ষ্য করে ভারী গোলাবর্ষণ শুরু করে ভারত। কামান, মর্টার-শেলের আঘাতে জঙ্গি ডেরাগুলি ধুলিসাৎ হয়ে যায়। চার-পাঁচটি লঞ্চপ্যাড ধ্বংস হয়ে গেছে বলে খবর। মর্টারের পাশাপাশি বফর্সের মতো কামানও ব্যবহার করে ভারতীয় বাহিনী।
সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত জানিয়েছেন, এই লঞ্চপ্যাডগুলো সবই অস্থায়ী। জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটানোর আগে এই ঘাঁটিগুলোকে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে নিয়ে পাক সেনারা। আবার প্রয়োজনে সরিয়েও নিয়ে যায়। ভারতীয় সেনা সূত্রে জানাচ্ছে, জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তৈবা ও আল-বদরের অন্তত ১৮ জন জঙ্গি নিকেশ হয়েছে এই প্রত্যাঘাতে। নিহত ১২ জন পাক সেনা। গুলিবিনিময় থেমে গেলে গভীর রাতে অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে মৃতদেহগুলো তুলে নিয়ে যায় পাক সেনারা।
৫ অগস্ট জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ করে বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার পর থেকেই নিয়ন্ত্রণরেখায় অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের ঘটনা বাড়িয়ে চলেছে পাক সেনা। চলতি বছরে দু’হাজারেরও বেশি বার অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন হয়েছে নিয়ন্ত্রণরেখায়। বিশেষ করে বেড়ে গিয়েছে সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ। টংধারের পাশাপশি কাঠুয়ার হীরানগর সেক্টরেও পাক সেনা গোলাবর্ষণ চালায় বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনা। তাতেও কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে প্রাণহানির খবর নেই।
আরও পড়ুন:
https://www.four.suk.1wp.in/news-national-40-rockets-to-be-fired-in-the-span-of-20-seconds-in-pokhran/
পড়ুন, দ্য ওয়ালের পুজোসংখ্যার বিশেষ লেখা...
https://www.four.suk.1wp.in/pujomagazine2019/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%9a%e0%a7%80%e0%a6%a8-%e0%a6%b8%e0%a6%9a%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0-%e0%a6%aa%e0%a7%8b%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d/