মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, "ওদেরও তো সংসার রয়েছে। যতক্ষণ না সমস্যার সমাধান হচ্ছে ততক্ষণ সরকার এই অনুদান দেবে।"
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শেষ আপডেট: 14 May 2025 17:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে এসএসসির (SSC 2016) ২০১৬ সালের আস্ত প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যার জেরে শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী মিলিয়ে প্রায় ২৬ হাজার মানুষ কর্মহারা। এদের মধ্যে শিক্ষকদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেও শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কোনও সময় দেয়নি আদালত।
এ ব্যাপারে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি শিক্ষাকর্মীদের আগেই বরাভয় দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। জানিয়েছিলেন, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গ্রুপ সি কর্মীদের মাসিক ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর সেই ঘোষণা অক্ষরে অক্ষরে মেনে এদিন রাজ্যে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পরে নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অনিবার্য পরিস্থিতিতে বেতন বন্ধ হয়ে যাওযায় ওয়েস্ট বেঙ্গল লেবার ডিপার্টমেন্টের আওতায় ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভলি হুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি স্কিমে ২০২৫ পয়লা এপ্রিল থেকে প্রতিমাসে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের যথাক্রমে ২৫,০০০ ও ২০,০০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, "ওদেরও তো সংসার রয়েছে। যতক্ষণ না সমস্যার সমাধান হচ্ছে ততক্ষণ আমাদের সরকার এই অনুদান দেবে।" মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এও বলেন, "কেউ কেউ বলবে দরকার নেই, এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। তবে আমাদের সরকার সবার কথা ভাবে, তাই এই সিদ্ধান্ত।"
তাই তাদের জন্য আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যেটা আগেই জানিয়েছিলাম। কোর্টের অর্ডার অনুযায়ী তাদের বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের সংসার গুলো সমস্যায় রয়েছে। তাই আজকে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল লেবার ডিপার্টমেন্টের আওতায় ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভলিহুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি স্কিম ২০২৫ পয়লা এপ্রিল থেকে মাসে যতদিন পর্যন্ত না সিদ্ধান্ত হচ্ছে যথাক্রমে গ্রুপ সি ২৫,০০০ ও গ্রুপ ডি ২০,০০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্তটা আজ মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হলো।
একই সঙ্গে নাম না করে বিরোধীদের কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "এখানে তো অনেকে কথায় কথায় পিল খায়, পিল খেয়ে কিল দেয় মানুষকে। খেতে দেওয়ার মুরোদ নেই, কিল মারার গোঁসাই! এই জন্যই আমাদের মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুদানের স্কিম চালু করলাম।"
২০১৬ সালের নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল মামলা। হাইকোর্ট প্রথমে আস্ত প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল। পরে সুপ্রিমকোর্টও একই নির্দেশ বহাল রাখে। তবে রাজ্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামোর কথা ভেবে চাকরিহারা শিক্ষকদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট। ওই সময়ের মধ্যে রাজ্যকে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। শীর্ষ আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলাও দায়ের হয়েছে।