শেষ আপডেট: 12th October 2023 14:09
দ্য ওয়াল ব্যুরো, উত্তর ২৪ পরগনা: এক সময় কামানের শব্দে পুজো শুরু হত গোবরডাঙার জমিদার বাড়িতে। জোড়া নৌকায় ভাসান যেত প্রতিমা। চলত গান, বাজনাও। এইভাবে জমকালো আয়োজনে কাটত পুজোর চারটে দিন। এখন সে সব অতীত, এমনটাই জানালেন জমিদার বাড়ির সদস্য নয়নপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়।
গোবরডাঙার এই সাবেকি পুজো এবার ৩১২ বছর পেরিয়েছে। জমিদার বাড়ির ঠাকুর দালানে এখন প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। সাদা চুন খসে পড়া জমিদার বাড়ি বর্তমানে সাধারণের দ্রষ্টব্য স্থান হিসাবেই থেকে গিয়েছে। তবু জৌলুসহীন পুজো নিয়ে স্থানীয় মানুষের আবেগ জড়িয়ে আছে। তাই পুজোর কটা দিন সেখানে সাদামাটা পুজো দেখতেই আজও অনেকে ভিড় করেন।
মুখোপাধ্যায় পরিবারের অষ্টমপুরুষ নয়নপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এখন বাড়ির পুজোর তদারকি করছেন। তাঁর কথায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বহু নিয়মের বদল হয়েছে। তবে ঐতিহ্য মেনে এখনও বাড়ির ঠাকুর দালানে এক চালার প্রতিমায় পুজো হয়। ষষ্ঠীর দিন ও সন্ধিপুজো শুরু করার আগে কামান দাগা হতো। আশেপাশের মানুষকে জানান দেওয়া হতো উমা এসেছেন ঘরে। পুজোর চারটে দিন আলোর রোশনাইতে ভরে উঠত গোটা জমিদারবাড়ি। দেশের কোণায় কোণায় থাকা গায়ক, বাদকদের আনা হতো বাড়িতে। বসত মজলিশ। রাতভোর চলত আসর।
নয়নবাবু আরও জানান, আগে পশুবলির প্রথা ছিল। সেই সময় ১৩টা পাঁঠা, দুটো ভেড়া বলি দেওয়া হতো। চারদিন ধরে এলাকায় কারও বাড়িতে হাঁড়ি চড়ত না। তাঁরা পাত পেরে এ বাড়ির ভোগ খেতেন। প্রথার পরিবর্তন আসে ১৯৯৭ সালে। বন্ধ করে দেওয়া হয় পশুবলি। এখন দেবীকে মধু ও চিনির ভোগ দেওয়া হয়। এইভাবে নিতান্তই অনাড়ম্বরে কেটে যায় গোবরডাঙার তিন শতাব্দী অতিক্রান্ত মুখোপাধ্যায় বাড়ির পুজো।