শেষ আপডেট: 30th July 2024 13:22
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব মেদিনীপুর: জুন থেকে অক্টোবর প্রতিবছরই বিপদ বাড়ে সমুদ্রে। বর্ষার মরসুমে এমনিতেই নিম্নচাপ ও ভরা কোটালে উত্তাল হয় সমুদ্র। তার উপর পর্যটকদের বেপরোয়া মনোভাবের খেসারত দিতে হয় আকছাড়। গত ১৫ দিনে দিঘা, শঙ্করপুর, মন্দারমণি মিলিয়ে ছ’জন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। গত তিন মাসে সমুদ্রে প্রাণ দিয়েছেন ১০ জন।
রবিবারই দিঘার সমুদ্রে তলিয়ে যান ব্যারাকপুরের টিটাগড়ের বাসিন্দা দীপঙ্কর নন্দী (৩০)। সি-হক ঘোলাঘাটে বন্ধুদের সঙ্গে স্নান করতে নেমেছিলেন দীপঙ্কর। পুলিশের দাবি, নেশা করে জলে নেমেছিলেন তিনি। বারবার বারণ করেছিলেন সৈকতে থাকা নুলিয়া এবং পুলিশকর্মীরা। কিন্তু কানে তোলেননি। ঢেউয়ের তোড়ে বেশ কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিলেন। সমুদ্র থেকে উঠে আসা আর সম্ভব হয়নি তাঁর।
একইভাবে গত সোমবার ২২ জুলাই শঙ্করপুরে জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে সেলফি তুলছিল বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক প্রিয়ন্তি পাটোয়ারি (১৭)। ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে যায় প্রিয়ন্তি। পরে দেহ মেলে। এই ঘটনার সাতদিন আগেই মন্দারমণিতে সমুদ্রস্নানে নেমে ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে যান দুর্গাপুরের তিন বাসিন্দা সমর চক্রবর্তী (৩৮), কৌশিক মণ্ডল (৩০) ও ঋত্বিক গড়াই (২৩)। ১৬ জুলাইয়ের ওই ঘটনায় শোকের ছায়া নামে তাঁদের পরিবারে। তার আগের দিনই মন্দারমণিতে সমুদ্রে তলিয়ে যান হাওড়ার আন্দুলের বাসিন্দা অনুপম বর্মন (২৫)।
সমুদ্রে পরের পর দুর্ঘটনা আতঙ্ক বাড়িয়েছে সৈকতে। তবে পুলিশের দাবি, পর্যটকদের বেহিসাবি মনোভাবেই বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটছে। বহু ক্ষেত্রেই নেশাগ্রস্থ অবস্থায় সমুদ্রে নামছেন পর্যটকরা। পুলিশের প্রচার, নুলিয়াদের বাধা, কানে তুলছেন না কিছুই। বহুক্ষেত্রে অ্যাডভেঞ্চারও প্রাণ কাড়ছে। দিঘার সি-হক ঘোলা ঘাট, ক্ষণিকা ঘাটে স্নানের জন্য ভিড় বাড়ে সপ্তাহান্তে। এইসব ঘাটে পর্যটকদের সচেতন করতে বোর্ড লাগানো হয়েছে। মাইকে প্রচারও চলছে। নজরদারি চলছে মন্দারমণিতেও। কিন্তু পর্যটকরা সচেতন না হলে দুর্ঘটনা রোখা অসম্ভব।
মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দিবাকর দাস জানান, বর্ষার মরসুমে প্রতিবারই উত্তাল হয়ে ওঠে দিঘা। এবারও তাই বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। যে সমস্ত ঘাটে বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে সেখানে পর্যটকদের সমুদ্রে নামার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। বারণ না শুনলে এবার কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।