শেষ আপডেট: 24th May 2019 18:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কী কারণে ভরাডুবি জেটের? বিপুল ঋণের বোঝার পিছনে কারণ কি প্রতিষ্ঠাতা নরেশ গয়ালের গাফিলতি আর উদাসীনতা? তদন্ত শেষ না হওয়া অবধি দেশ মোটেও দেশ ছাড়তে পারবেন না নরেশ গয়াল ও তাঁর স্ত্রী অনিতা, এমন নির্দেশই জারি করলো এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। শনিবার বিকেলে মুম্বই বিমানবন্দরে সস্ত্রীক নরেশ গয়ালকে আটকালেন অভিবাসন দফতরের কর্তারা। জারি হলো লুক আউট নোটিস। ঋণভারে জর্জরিত জেট এয়ারওয়েজ থেকে কার্যত সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন নরেশ গয়াল ও অনিতা। জানিয়ে দিয়েছেন, এয়ারওয়েজের বোর্ডেও আর তাঁদের কোনও শেয়ার থাকছে না। বোর্ড থেকেও ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন দু’জনে। দেনা আর ক্ষতির বোঝায় ধুঁকতে থাকা বিমান পরিষেবা সংস্থাটির নিয়ন্ত্রণ আপাতত চলে গেছে স্টেট ব্যাঙ্ক সমেত ঋণদাতাদের হাতে। সূত্রের খবর, শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ মুম্বই বিমানবন্দর থেকে এমিরেটস একে-৫০৭ উড়ানে চেপে বসেছিলেন নরেশ-অনিতা। গন্তব্য দুবাই। সেখান থেকে ফের বিমানে লন্ডনে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল দু’জনের। বিমান রানওয়ে দিয়ে গড়াতেই হাজির হন অভিবাসন দফতরের কর্তারা। জরুরি নোটিস পাঠিয়ে বিমান ফিরিয়ে আনা হয় টার্মিনালে। জেটের প্রতিষ্ঠাতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়, যতদিন না তদন্ত শেষ হচ্ছে, দেশ ছেড়ে যেতে পারবেন না কেউই। জেটের ঘাড়ে এই মুহূর্তে ৮,৫০০ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক ঋণের বোঝা। সেই সঙ্গে কর্মীদের বকেয়া বেতন। নতুন করে কেউ পুঁজি না ঢাললে এর পরে জেটের চাকা কোন পথে গড়াবে তা বলা বেশ কঠিন। ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে দেশি-বিদেশি সমস্ত উড়ান। স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ ঋণদাতাদের গোষ্ঠীও ধীরে ধীরে হাত তুলে নিচ্ছে। সব মিলিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় ২২,০০০ পরিবার। ১৯৯৩ সালে চারটি ভাড়া করা বিমান নিয়ে পথচলা শুরু জেটের। সেই সময় জেটের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল সিটিলিঙ্ক, ইস্ট-ওয়েস্ট, দামানিয়া-র মতো বিমান সংস্থা। পরে এই সংস্থারগুলি হাত গুটিয়ে নেয়। তদানীন্তন ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে যায় একমাত্র জেট এয়ারওয়েজ। ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা শুরু হয় জেটে। ২০০৯ সালে সাহারার লোকসানে চলা উড়ান সংস্থা কেনেন নরেশ গয়াল। একসময় অভিযোগ ওঠে, অপরাধ জগতে টাকা খাটছে জেটের, নাম জড়ায় দাউদ ইব্রাহিমেরও। গত পাঁচ বছরে দেশে অন্তত সাতটি বিমান সংস্থা পরিষেবা গুটিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, মধ্যে রয়েছে দামানিয়া, মোদিলুফৎ, সহারা, এয়ার ডেকান, কিংফিশার। প্রশ্ন উঠছে, জেটের ভবিষ্যৎও কি হতে চলেছে কিংফিশার এয়ারলাইন্সের মতো? যে সংস্থা ২০১২ সালে বন্ধ হয়েছে পাকাপাকি ভাবে।