শেষ আপডেট: 2nd December 2024 23:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মর-পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন হাওড়ার প্রাক্তন সাংসদ স্বদেশ চক্রবর্তী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল আশি বছর। সোমবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ হাওড়ার বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন প্রবীণ এই সিপিআইএম নেতা।
৩৪ বছরের বামফ্রন্ট জমানায় সিপিএমের যে নেতাদের 'দাপুটে' বলা হতো, স্বদেশ চক্রবর্তী ছিলেন সেই তালিকায় প্রথম তিনে। হাওড়ার মেয়র এবং এমপি থাকার সময় তো বটেই, যখন নিছকই পার্টি নেতা তখনও হাওড়া জেলাশাসক, পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা কেউ স্বদেশ বাবুকে না জানিয়ে কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতেন না।
সেই কারনে তাঁকে কেউ বলত 'হাওড়ার জ্যোতি বসু', কারও কথায় ছিলেন হাওড়ার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অনুগামীদের বলা হত স্বদেশ বাহিনী। তাঁর দাপটের কারণে বিরোধীরা হাওড়াকে বলত, 'স্বদেশের দেশ'।
যদিও স্বদেশে চক্রবর্তী কখনও গলা উঁচিয়ে কথা বলতেন না। নির্বাচনে পার্টিতে তাঁর অনুগামী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে রিগিং, ছাপ্পা, সন্ত্রাসসের ভুরি ভুরি অভিযোগ ছিল। তিনি মেয়র থাকাকালে হাওড়া শহরে বেআইনি বাড়ি তৈরি, পুকুর বোজানো, প্রমোটাররাজ, সিন্ডিকেটরাজের রমরমা শুরু হয়। মাথাচাড়া দেয় নয়া মস্তানরাজ। তবে মেয়র, এমপি এবং এবং পার্টির নেতা হিসাবে প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী হওয়া সত্বেও ব্যক্তি স্বদেশবাবুর বিরুদ্ধে কখনও টাকা পয়সা চুুরি করা বা সরকারি প্রকল্পে নয়ছয় করার অভিযোগ ওঠেনি। বদনাম কুড়িয়েছেন পার্টির জন্য।
স্বদেশবাবু ১৯৬১ সালে ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে পার্টির সংস্রবে আসেন। আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি লালবাজার সেন্ট্রাল লক আপে ছিলেন। প্রেসিডেন্সি জেলেও জীবন কাটিয়েছেন। ১৯৬৩ সালে সিপিআইএম পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন। দীর্ঘ ছয় বছর পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন।এছাড়া হাওড়া জেলা কমিটির সদস্য ও জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ছিলেন।হাওড়া সদরের দুবারের সাংসদ ছিলেন স্বদেশ চক্রবর্তী। দু"বারের হাওড়া পুরসভার মেয়র ছাড়াও হাওড়া ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট ও এইচ আর বি সি র চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।