শেষ আপডেট: 12th January 2022 08:44
দ্য ওয়াল ব্যুরো: উত্তরপ্রদেশে অন্তত ২০জন মুসলিমকে প্রার্থী করার দাবি তুললেন ওই রাজ্যে বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি জামাল সিদ্দিকি। মঙ্গলবার দিল্লিতে বিজেপির নির্বাচনী কমিটির বৈঠকে এই দাবি পেশ করেন তিনি। ২০১৭-র বিধানসভা ভোটে বিজেপির তালিকায় একজনও মুসলিম প্রার্থী ছিলেন না। বিজেপি একাই ৩২৫ আসনে জয়ী হয়। ৪০৩ আসনের বিধানসভার বাকি প্রার্থীদের মধ্যে ২৫জন মুসলিম প্রার্থী বিভিন্ন দল থেকে জেতেন। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় অতীতে কখনও এত কম সংখ্যক মুসলিম বিধায়ক ছিলেন না। এবারও বিজেপির তালিকায় মুসলিম প্রার্থী থাকবে না, এমনটাই পরিস্থিতির বিচারে অনেকেই মনে করছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলতে গেলে মুসলিমদের বিরুদ্ধ জেহাদ ঘোষণা করেছেন। দু’দিন আগেই বলেছেন, এবারের ভোটে লড়াই আশি শতাংশ বনাম কুড়ি শতাংশ। প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশে হিন্দু জনসংখ্যা আশি শতাংশের সামান্য কম। অন্যদিকে, মুসলিমরা জনসংখ্যার প্রায় কুড়ি শতাংশ। যোগী আসলে কুড়ি শতাংশের বিরুদ্ধে লড়াই বলতে মুসলিমদেরই বোঝাতে চেয়েছেন বলে বিরোধীদের অভিযোগ। শুধু ভোটের মুখেই নয়, যোগী সরকারের একাধিক পদক্ষেপে মুসলিমরা পদে পদে বিপাকে পড়েছে। তা গো-মাংস বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা, লাভ জেহাদ আটকানোর নামে মুসলিম তরুণদের টার্গেট করা হয়েছে। আর বিরোধীদের বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণের কথা তাঁর মুখে সর্বদা লেগে আছে। এই পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতির ২০টি আসনে মুসলিম প্রার্থীর দাবি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। উত্তরপ্রদেশে মোট আসন ৪০৩। অর্থাৎ মোট আসনের চার শতাংশ দাবি করেছেন মুসলিমদের জন্য। কিন্তু দলের তরফে এখনও কেউ এই ব্যাপারে উচ্চবাচ্য করেননি। তবে দলের একটি সূত্রের বক্তব্য, জামাল সিদ্দিকির দাবি খুবই অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপির কাছে। বস্তুত, এই দাবির সপক্ষে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কোনও সিদ্ধান্তই করা কঠিন। উত্তরপ্রদেশে পাঁচ বছর সরকার পরিচালনার পরও দেখা যাচ্ছে হিন্দুত্ব ছাড়া উপায় নেই। সেই কারণে মেরুকরণের পথ নিয়েছে দল। আক্রমণের নিশানা করা হচ্ছে মুসলিমদের। এই অবস্থায় দলে মুসলিম প্রার্থী থাকলে মেরুকরণের কৌশল ভোঁতা হয়ে যাবে। জামাল সিদ্দিকি মুসলিম প্রার্থী চেয়ে দলে সরব হতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের দৃষ্টান্ত টানেন। বাংলায় গত বছর বিজেপি নয়জন মুসলিমকে প্রার্থী করেছিল। তাদের পাঁচজনকে মুর্শিদাবাদে এবং দু’জন করে মালদা ও উত্তর দিনাজপুরে প্রার্থী করা হয়েছিল। তাঁর বক্তব্য, অসম ও বাংলায় দেখা গিয়েছে মুসলিম প্রার্থী থাকায় দলের ভোট বেড়েছে। বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার জাতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন এবং গত মাসে কলকাতার পুরভোটে প্রচার করে গিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, উত্তরপ্রদেশে অন্তত একশোটি আসন আছে যেখানে মুসলিমরা গড়ে জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ। সেখানে ২০টি আসনে প্রার্থী দেওয়া যেতে পারে যেখানে মুসলিমরা পঞ্চাশ শতাংশের বেশি।