শেষ আপডেট: 11th February 2025 00:06
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জল, স্থল কিংবা অন্তরীক্ষ, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছেলেদের সঙ্গে মেয়েরাও সমানভাবে পাল্লা দিচ্ছে। তাহলে পূজার্চনা থেকেই বা মেয়েরা পিছিয়ে থাকবে কেন?
এমন ভাবনা থেকে ঘটা করে মেয়ের পৈতে দিয়ে ব্রাহ্মণদের তৈরি তথাকথিত নিয়মকে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করলেন মালদহের ইংরেজবাজার শহরের ঘোড়াপীর ঘোষপাড়া এলাকার সিদ্ধান্ত পরিবার।
সমাজে ছেলে ও মেয়ের সমান অধিকারের বার্তা ছড়িয়ে দিতেই এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন পেশায় ব্যবসায়ী মনোজ কুমার সিদ্ধান্ত। তাঁর কথায়, "আমার মেয়ে তো বড় হয়ে পুরোহিতও হতে পারে। তাঁর সামনে আমরা সেই সুযোগ দিয়ে রাখলাম!" মালদহ তথা গোটা উত্তরবঙ্গে এই প্রথম সামাজিক ভাবে কোন মেয়ের উপনয়ন হল বলেও দাবি মনোজবাবুর।
মনোজবাবুর বক্তব্যকে ১৬ আনা সমর্থন জানিয়ে সিদ্ধান্ত পরিবারের পুরোহিত সদানন্দ বাগচীর দাবি, "বৈদিক যুগে নারী পুরুষের কোন ভেদাভেদ ছিল না। তখন নারীদেরও পৈতে বা উপনয়ন হত।"
তিনি এও বলেন, "অস্বীকার করার উপায় নেই, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা বজায় রাখতে পরে নারীদের পূজার্চনা থেকে ব্রাত্য করে রাখা হয়েছিল। এখন সমাজের মানসিকতায় বদল ঘটছে। মেয়েরাও পুরোহিতের কাজ করছে। এতে কোনও বাধা নেই।"
মনোজবাবুর দুই মেয়ে। মধুপর্ণা ছোট, মধুশ্রী বড়। এদিন ঘটা করে পৈতে হল ৯ বছরের মধুপর্ণার। মনোজবাবুর স্ত্রী পায়েল বলেন, "আমাদের কোনও ছেলে নেই। তাই সমাজে চিন্তাধারা পাল্টানোর জন্য একসঙ্গে দুই মেয়ের পৈতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তবে বড় মেয়ে লজ্জায় পৈতে নিতে রাজি হয়নি তাই ছোট মেয়েকে পৈতে দিলাম।"
শহরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে ছোট্ট মধুপর্ণার। সে বলে, "অনেক ভাল লাগছে।পুজোপাঠ করতে আমি ভালোবাসি, তবে বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।"