দেবাংশু ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: 13th February 2025 21:57
রঙিন এই শহরে দুটোই পাশাপাশি থাকে। প্রেম আর রাজনীতি। না হলে এই শহরেই ঠোঁটে ঠোঁট রেখে ব্যারিকেড গড়ার আহ্বান জানানো হয়? কাঠ কাঠ কথায় বিরোধীদের ধরাশায়ী করা তৃণমূল নেতাও ধরাশায়ী হয়েছিলেন প্রেমে। যেখানে টেবিল চাপড়ে কোনও তর্কের চেয়ে অনুরাগ ছিল বেশি।
সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকারটি দেখুন
ভ্যালেন্টাইন্স উইকে দেবাংশুর আজ অবধি না বলা কিছু গল্পকে দ্য ওয়াল ধরে রাখার চেষ্টা করেছে। যুব নেতা নিজেকে খাঁটি সিঙ্গল হিসেবে দাবি করলেও তাঁর প্রেমিকসত্ত্বাও কিন্তু নিখাদ। কারণ ব্যাখ্যা করলে ফিরে যেতে হবে বেশ খানিকটা পেছনে। তখন দেবাংশু ইলেভেনের ছাত্র। দীর্ঘদিন সম্পর্কে থাকলেও সেই প্রেম টেকেনি তাঁর। যুবনেতা খোলসা করলেন, "প্রথম প্রেম কোনও ইকুয়েশন বুঝে আসে না, এমনিই হয়ে যায়। যে কারণে বেদনাহতও প্রায় প্রত্যেককে হতে হয়। তবে টিপিক্যাল বাঙালি প্রেম বলতে যা বোঝায়, মানে হাত ধরে প্রিন্সেপ ঘাটে ঘোরা, ভিক্টোরিয়ায় গিয়ে ঝালমুড়ি খাওয়া কিংবা বালি ব্রিজের ফুটপাথ ধরে হাঁটা, সেরকম কিছু হয়নি। মোটামুটি একটা ভাললাগা ছিল। কিন্তু সেটা কোনও ভাবে ম্যাচিওর করেনি।"
তাহলে দেবাংশুর কাছে প্রেমের সংজ্ঞা কী? জানালেন, "প্রেম নামক শব্দের থেকেও তাঁর কাছে বড় হল সম্পর্ক। সম্পর্কের অর্থই হচ্ছে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সঙ্গে থাকা। একে অপরের দোষ-গুণ জেনে দু'জনকে স্বীকার করা। বাড়িতে যখন আমার বিয়ে নিয়ে আলোচনা হয়, তখন ভয়ই করে কারণ এই জেনারেশনে বিবাহবিচ্ছেদের প্রবণতা বেশি। তাই আমার কাছে বিয়ে করার থেকে বিয়ে টেকানোটা বড় ব্যাপার, অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।"
কিন্তু মজার কথা হল বিয়ে 'আতঙ্কের' পরেও দেবাংশুর দরজার চৌকাঠে মেয়ের বাবা-মায়েরা ছবি সমেত চিঠি লিখে বিয়ের প্রস্তাব দেন। দেবাংশু বলেন, "শুধু তাই নয় আরও মজার ব্যাপার, একটি মেয়ে এই ঘটনার কয়েকমাস আগে আমার ফেসবুকে যত 'ভট্টাচার্য' পদবীর মানুষ আছে সবাইকে বাড়ির লোক ভেবে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিল। ভাগ্যিস আমি তন্ময় ভট্টাচার্য, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সঙ্গে ফ্রেন্ডে নেই। তাহলে তাঁদেরও রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে দিত।"
এরপরও খানিকটা ইতস্তত দেবাংশু। মায়ের প্রশ্নে এখনও তিনি উত্তরে বলেন, "হয়তো সমাজের দশজনের মধ্যে চারটে মানুষ আমাকে চেনে, আমার যখন পঞ্চাশ বছর বয়স হবে তখনও যে সোসাইটিতে আমার এই একই পজিশন থাকবে তার তো কোনও গ্যারান্টি নেই। আজ যে আমায় আমার পজিশন দেখে কাছে আসছে, সেই পঞ্চাশ বছরের পরিস্থিতি দেখে কাছে থাকবে তার কী নিশ্চয়তা আছে?"
রাজনীতির মতো তর্ক, পাল্টা তর্কের বদলে তৃণমূলের যুবনেতা মনে করেন প্রেমে কোনও লজিক না থাকলেও সম্পর্কে লজিক্যাল হওয়া জরুরি। তবে দেবাংশুর প্রথম প্রেম অবশ্য সব লজিক ভেঙে দিয়েছিল। মায়ের দেওয়া হাতখরচের পাঁচটাকা জমিয়ে কোয়েশ্চেন পেপারে লুকিয়ে চকোলেট দেওয়া লাজুক প্রেমিক বিরহের সুর শুনেছিল বৈকি। না হলে প্রেমিকার জন্য পুরীতে ঘুরতে গিয়ে কিনে আনা চাবির রিং রেলস্টেশনে ছুড়ে দিয়ে চলে আসেন?