সুজন চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: 13th April 2025 09:22
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এসএসসি নিয়োগ মামলায় (SSC Recruitment) ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। তার ফলে প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি গিয়েছে। এঁদের মধ্যে অযোগ্যদের সঙ্গে অনেক যোগ্য প্রার্থীও আছেন। এই চাকরি বাতিল নিয়ে যখন রাজ্য-রাজনীতিতে দায় ঠেলাঠেলি চলছে, তখন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty) স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন, যাঁদের দায়িত্ব ছিল চাকরি দেওয়ার, এক এবং একমাত্র তাঁদেরই অপরাধে হকের চাকরি কেড়ে নেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।
এদিন দ্য ওয়ালকে রাজ্যের প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএম নেতা বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে বাম আমলে প্রত্যেক বছর এসএসসি হয়েছে। বরাবর স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ হয়েছে। প্রোমোশন হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়েছেন। পড়াশোনা করেছেন, চাকরি পেতে চেয়েছেন। কেউ স্বচ্ছতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন তুলতে পারেননি। মিছিল করেননি। অর্থাৎ স্বচ্ছভাবে নিয়োগ করা যায়। তার জন্য রাস্তায় বসতে হয় না, এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও মিটিং-মিছিল করতে হয়নি। আমাদের রাজ্য তো এভাবেই অভ্যস্ত। পরিবর্তনের পর কী এমন হল যার জন্য '১১ সালের পর কোনও নিয়োগ প্রক্রিয়াই হল না? একবার যাও বা '১৬ সালে হল সেটাও এমনভাবে কলুষিত যে প্যানেলটাই বাতিল হয়ে গেল।"
সুজনের অবশ্য যোগ্য-অযোগ্য শব্দতে আপত্তি আছে। সে কথা জানিয়ে বামনেতা বলেন, "এই শব্দদুটো বেঠিক। বরং স্বচ্ছ মেধা সম্পন্ন একটা দিক, আর একদল অস্বচ্ছ, দুর্নীতিগ্রস্ত। প্রচুর ছেলে-মেয়ে স্বচ্ছ, মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছে। আবার অনেকে সেই সুযোগ না পেয়ে অস্বচ্ছ ও দুর্নীতির টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন। ফলে চালের সঙ্গে কাঁকরটা কে মিশিয়ে দিয়েছে যে, সেই চালটাকে বস্তাপচা করে দিয়েছে।"
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার চাকরিহারাদের বরাভয় দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। শুক্রবার দীর্ঘ তিন ঘণ্টা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার পর সরকারের উপরে খানিকটা ভরসা রাখছেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। কিন্তু সাংবাদিক বৈঠক করে বঞ্চিতরা এটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন যোগ্য-অযোগ্য তালিকা প্রকাশ্যে না আসা পর্যন্ত সম্পূর্ণ 'নিশ্চিন্ত' হতে পারছেন না তাঁরা।
বামনেতা মনে করেন, সরকারের যদি সদিচ্ছা থাকত তাহলে এরকম পরিস্থিতি তৈরিই হত না। ২০১৬ সাল থেকে তারা বলে আসছে হায়ার স্কোর যাঁদের তাঁদের ডাকা হয়েছে। অথচ দেখা গেছে সাদা খাতায় নিয়োগ হয়েছে। তখনও নিয়োগ চালুই হয়নি। খাতায় পেন্সিলে মার্কিং করা হয়েছে। নিয়ম হল যিনি খাতা দেখবেন তিনি পেন দিয়ে খাতা দেখবেন, পেনসিলে নয়।"
সুজনের দাবি, প্রশ্ন ভুল, ওএমআর গণ্ডগোল, ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় নিয়ে তিনি বিধানসভায় একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছেন, আলোচনা করতে চেয়েছেন। কিন্তু খুব একটা গুরুত্ব দেননি মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীরা। তাঁর মতে এহেন আচরণ কখনওই সরকারের সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ হতে পারে না।