শেষ আপডেট: 12th November 2023 07:34
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেছে আগেই। মেয়ে এখনও বেশ ছোট, তাই আইন মোতাবেক সেই মেয়ের হেফাজত মাকেই দিয়েছিল কোর্ট। যদিও মাঝেমধ্যে মেয়ের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করার অনুমতি রয়েছে বাবার। কিন্তু তাতে কি আর মন ভরে? তাই পুজোর ছুটিতে আরও কয়েকটা দিন মেয়ের সঙ্গে সময় কাটাতে চেয়েছিলেন বাবা। সেই মামলার জল গড়িয়েছিল হাইকোর্ট অবধি। তার শুনানিতে সিরিয়াল-সিনেমার গল্পের মতো আইনজীবীর অনুপস্থিতিতে বাবা-মা নিজেরাই এমন তুখোড় সওয়াল-জবাব করলেন যে তার ভিত্তিতেই রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
ছোট্ট মেয়ের সঙ্গে আর একটু বেশি সময় কাটানোর জন্য কাঁদছিল বাবার মন। তাই যাতে ছুটিতে সন্তানকে কয়েকটা দিন কাছে পেতে পারেন তার জন্য বারাসত জেলা আদালতে আপিল করেছিলেন বাবা। যদিও নিম্ন আদালত তাঁর সেই আবেদনের কর্ণপাত করেনি। এরপরেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ভদ্রলোক।
মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের পূজাবকাশকালীন বেঞ্চে। শুনানির দিন যথা সময়ে বাবা-মা দুজনেই আদালতে হাজির হয়ে দেখতে পান, বাদী কিংবা বিবাদী কোনও পক্ষেরই কোনও আইনজীবী নেই। এদিকে আর সময় নষ্ট করলেও চলবে না। তাই বাধ্য হয়ে প্রাক্তন স্বামী স্ত্রী নিজেরাই সওয়াল-জবাব শুরু করেন।
ভদ্রলোক জানান, এখন তাঁর মেয়ের স্কুল ছুটি। এই সময়টুকুতে মাত্র কয়েকটা দিনের জন্য মেয়েকে কাছে রাখার অনুমতি দেওয়া হোক তাঁকে, এর বেশি আর কোনও দাবি নেই তাঁর। নাছোড়বান্দা মাও। সাফ জানিয়ে দেন, মেয়ের সঙ্গে এমনিতেই দেখা করার অনুমতি রয়েছে তাঁর। আলাদা করে এই আবেদনের তাহলে দরকার কী?
বাবা জানান, ১ মাস স্কুল ছুটি মেয়ের। তার মধ্যে তিনি যদি অতিরিক্ত কিছুদিন সন্তানের সঙ্গে কাটাতে চান তাতে অপরাধ কোথায়? এরপরেই মোক্ষম অস্ত্র বের করেন মা। সাফ জানিয়ে দেন, স্কুল ছুটি হলেও পড়াশোনার ছুটি নয়। স্কুলের দেওয়া হোমওয়ার্কও আছে, সে সবই শেষ করতে হবে সময়ের মধ্যে।
এরপর আদালত আর যুক্তি দেওয়ার জায়গা দেয়নি বাবাকে। মেয়ের সঙ্গে অতিরিক্ত দেখা করার আবেদন নাকচ করে দেয় বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের বেঞ্চ। আদালত জানিয়ে দেয়, শিশুটির পড়াশোনায় যাতে কোনও ক্ষতি না হয় তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে নেহাতই চাইলে বাবা এসে আলাদা করে মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। পুজোর ছুটির মধ্যে মাত্র দু'দিন ব্যক্তিগত খরচে বাইরে সন্তানের সঙ্গে বাবাকে দেখা করার অনুমতি দিয়েছে আদালত।