শেষ আপডেট: 16th September 2024 14:51
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনার জন্য সোমবার সরকার ফের প্রস্তাব দিয়েছে। মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের জন্য এটা শেষ প্রস্তাব। তার পর জুনিয়র ডাক্তারদের অধিকাংশই মনে করছেন, আলোচনায় অংশ নিয়ে এদিনই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত। তাঁদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে সরকার অন্তত দুটি দাবি মেনে নিলে আর অচলাবস্থা জিইয়ে রাখা সঙ্গত হবে না।
জুনিয়র ডাক্তারদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে প্রথমটি হল, আরজি করের ঘটনার দ্রুত বিচার ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। তা ছাড়া তথ্য ও প্রমান লোপাট যারা করেছে তাদের কঠোরতম সাজা হোক। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, এখানে রাজ্য সরকারের এখন কিছু করার নেই। এ ব্যাপারে সিবিআই তদন্তের অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে।
বাকি চার দফা দাবি হল, সন্দীপ ঘোষকে সাসপেন্ড করতে হবে। স্বাস্থ্য সচিব, ডিরেক্টর হেল্থ সার্ভিসেস এবং ডিরেক্টর মেডিকেল এডুকেশন পদে এখন যাঁরা রয়েছেন তাঁদের সরাতে হবে। তিন, কলকাতা পুলিশের কমিশনারের পদ থেকে বিনীত গোয়েলকে ইস্তফা দিতে হবে। চার, সব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল আর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। এবং সর্বোপরি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে ভয়মুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ সুনিশ্চিত কায়েম করতে হবে।
জুনিয়র ডাক্তারদের অধিকাংশের মতে, বাকি চার দফা দাবির মধ্যে সরকার দুটি মেনে নিলেই কর্মবিরতি তুলে নেওয়া উচিত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এমনিতেই হাসপাতালে ভয়মুক্ত পরিবেশ সুনিশ্চিত করতে হবে সরকারকে। তা ছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা পরিকাঠামো বাড়ানোর ব্যাপারেও সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়ে রেখেছে। সরকারকে মঙ্গলবার এ বিষয়ে স্ট্যাটাস রিপোর্ট পেশ করতে হবে সর্বোচ্চ আদালতে। এই দাবিগুলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমনিতেই মেনে নিয়েছেন। শনিবার ধর্নামঞ্চে গিয়ে তিনি পরিষ্কার করে বলেছেন সেটি। সেই সঙ্গে হাসপাতাল পরিচালন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনা ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন।
জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি ও আন্দোলনের মধ্যে এখন নানা মুনি। তাঁদের মতও নানা। এঁদের মধ্যে ডিএসও, এআইডিএসও, এসএফআই এমনকি মাওবাদীরাও রয়েছেন বলে খবর। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তারদের অনেকের দাবি, হাতে গোণা কয়েকজন উগ্র বামপন্থী ছাড়া বেশিরভাগই কাজে ফিরতে চাইছেন। কারণ তাঁদের এর পরেও জেদাজেদি করলে সর্বোচ্চ আদালতও তা ভালভাবে নেবে না। তা ছাড়া সরকার যেহেতু সহানুভূতি দেখাচ্ছে এবং বারবার আলোচনার জন্য ডাকছে, তাতে এর পর কোনও আড়ষ্টতা দেখালে জনমতও বিরুদ্ধে চলে যেতে পারে।
এখানে জানিয়ে রাখা ভাল, আরজি কর মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গত শুনানিতেই প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়ে দিয়েছিলেন, ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফিরতে হবে। কিন্তু তার পরেও কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। নির্ধারিত সেই সময়ের পর আরও পাঁচ দিন কেটে গেছে। মঙ্গলবার ফের সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি রয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে বড় অংশ মনে করছে, কর্মবিরতি সোমবার প্রত্যাহার না করলে মঙ্গলবার আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হবে। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশকে অবমাননা করা সঙ্গত কাজ হচ্ছে না।