শেষ আপডেট: 8th August 2024 18:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে উত্থান। মৃত্য়ুর পরেও আরও এক আন্দোলনকে টিকিয়ে রাখার বার্তা দিয়ে গেলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান!
অবশ্য বুদ্ধবাবুর আগে একইভাবে মরণোত্তর দেহদান করে গিয়েছেন জ্যোতি বসু, সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, মানব মুখোপাধ্যায়, শ্যামল চক্রবর্তী, সমর মুখোপাধ্যায়, অনিল বিশ্বাস, বিনয় চৌধুরীর মতো প্রয়াত কমিউনিস্ট নেতারা। দলীয় সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই দেহদানের অঙ্গীকার করেছেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্ররাও।
কেন করা হয় মরণোত্তর দেহদান? কীভাবেই বা এর সূচনা?
গণদর্পণ নামে একটি সংস্থার হাত ধরে এই আন্দোলনের হাতেখড়ি। ১৯৭৭ সালে কুসংস্কার প্রতিরোধে এই সংগঠন গড়ে তোলেন তৎকালীন কমিউনিস্ট নেতা ব্রজ রায়। মানবাধিক সংগঠন এপিডিআর-এও অনেকদিন কাজ করেছিলেন ব্রজ রায়। করোনার সময় মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর দেহদানের আন্দোলন এখনও টিকে রয়েছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যদের মতো গুটিকয়েক মানুষের দেহদানের অঙ্গীকারের মাধ্যমে। তবে বর্তমানে কমিউনিস্টদের পাশাপাশি বহু সাধারণ মানুষও চিকিৎসা গবেষণার জন্য মরনোত্তর দেহদানের অঙ্গীকারে এগিয়ে আসছেন।
উল্লেখ্য, কমিউনিস্টদের অনেকেই ধর্ম পরিচয় মানেন না। তাঁদের অনেকেই একসময় প্রশ্ন তুলেছিলেন, আজীবন যিনি ধর্ম পরিচয় মানলেন না, মৃত্যুর পর কেন তাঁকে ধর্ম পরিচয়ে সৎকার হতে হবে? এক্ষেত্রে তাঁরা আরও একটি যুক্তিকে সামনে এনেছিলেন। যে সমাজে বেড়ে ওঠা, মৃত্যুর পর দেহটি কেন সেই সমাজের না হয়ে ব্যক্তি মালিকাধীন হয়ে যাবে?
কমিউনিস্টদের মধ্যে চলতে থাকা এমন আলোচনার মাঝেই ১৯৬৪ সালের ১ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় বিজ্ঞানী জেবিএস হলডেনের। তিনি আগে থেকেই অন্ধ্রপ্রদেশে চিকিৎসা গবেষণার জন্য মরনোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলেন। এৎপরই চোখের সামনে নতুন দিশা খুলে যায় ব্রজ রায়দের। ১৯৮৫ সালে ব্রজ রায়-সহ গণদর্পনের পাঁচ সদস্য চিকিৎসা গবেষণার জন্য মরনোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করেন। সেই শুরু। তারপর থেকে মরনোত্তর দেহদানের অঙ্গীকারের আন্দোলনকে টিকিয়ে রেখেছেন কিছু মানুষ। বুদ্ধবাবু তাঁদেরই অন্যতম।