শেষ আপডেট: 25th February 2020 12:24
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কত মানুষের যে কত রকম শখ থাকে, আর সেই শখের জন্য যে মানুষ কত দূর যেতে পারে, তার বোধহয় কোনও সীমারেখা নেই। সাধারণ মানুষ সাধারণ শখেই সন্তুষ্ট থাকেন বেশিরভাগ সময়ে। কিন্তু অসাধারণ মানুষদের শখও হয় অসাধারণ। পরিচিত সীমার বাইরে। যেমন ব্রাজিলের মহিলা ইলাইন ডেভিডসন। তাঁর শখ পিয়ার্সিং করা। অর্থাৎ শরীরে নানা জায়গায় ছিদ্র করা। সেটা করতে করতে তিনি ১০ হাজারটি পিয়ার্স করিয়ে ফেলেছেন তাঁর সারা শরীরে। নামও লিখিয়েছেন গিনেস বুক অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে।
নাকে-কানে বেশিরভাগ মহিলাই ছিদ্র করেন গয়নাগাঁটি পরার জন্য। কেউ কেউ ভুরুতে, ঠোঁটে, নাভিতে এবং কানের উপরের অংশেও একাধিক ছিদ্র করে থাকেন। কিন্তু ইলাইন অল্পে সন্তুষ্ট নন। তাই নিছক শখের বশেই ১৯৯৭ সালে নিজের শরীরে ২৮০টি ছিদ্র করে ফেলে গয়নাগাঁটি পরতে শুরু করেন তিনি। সেই শুরু তার পরে যেন নেশায় পরিণত হল শরীরে ছিদ্র করে গয়না পরার শখ।
এই কৃষ্ণাঙ্গী মহিলার মুখেই এখন ৪৬২টি ছিদ্র রয়েছে। যার মধ্যে ২৯২টি ছিদ্র ঠোঁটে এবং জিভে। জিভের মাঝখানের ফুটোটি এত বড়, তাতে তাঁর আঙুলও ঢুকে যায়। এছাড়াও সারা শরীরে, হাতে, পায়ে, পেটে, বুকে অজস্র ছিদ্র ও গয়না রয়েছে তাঁর। ইলাইন ডেভিডসন তার যৌনাঙ্গে এবং তার আশপাশে ৫০০টিরও বেশি ছিদ্র করেছেন। তিনি সে সব ছিদ্রে যেসব অলঙ্কার পরেন, তার ওজন মোট তিন কেজি। ইলাইন তাঁর মুখে সবুজ, নীল ও হলুদ রঙের নকশা করেন। এতে করে তাঁর অলঙ্কারগুলি আরও বেশি করে ফুটে ওঠে।
২০০৮ সালে মে মাসে তাঁর শরীরে ছিদ্রের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৯২০টি। এর পরে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তা পৌঁছয় ৬ হাজার ৫টিতে।
ইলাইন বলেন, “পিয়ার্সিং করতে শুরু করার পরে নেশা হয়ে গেল। তখন ভাবলাম, যদি এই পিয়ার্সিংয়ের মাধ্যমেই নাম করতে পারি! আমি রেকর্ড করতে চেয়েছিলাম। তবে আমার পরিবার কখনও আমায় উৎসাহ দেয়নি এই কাজে। কারণ তাঁরা এসব পছন্দ করেন না। তবে আমি কারও কথা শুনিনি। রেকর্ড করে ছেড়েছি। বিশ্বের সবাই এখন আমাকে চেনে। গিনেস বুক অব দ্য ওয়ার্ল্ডে নাম লিখিয়ে প্রচণ্ড খুশি আমি।”
তবে ইলাইন শুধু শরীরে একাধিক ছিদ্র করেই থেমে নেই। তিনি খালি পায়ে কাচের টুকরার ওপরে হাঁটতে পারেন। আর এ কাজেও নাকি তিনি কোনও ব্যথা অনুভব করেন না। তাঁকে চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন যে, এত ছিদ্রের কারণে তিনি হেপাটাইটিস বা এইডসের মতো ভয়াবহ রোগ আক্রান্ত হতে পারেন। তবে ইলাইন অবশ্য কথা শোনেননি। বাড়তে বাড়তে তাঁর পিয়ার্সিংয়ের সংখ্যা ১০ হাজার ছুঁয়েছে।
২০১১ সালে ডগলাস ওয়াটসন নামে স্কটল্যান্ডের এক ব্যক্তিকে বিয়েও করেছিলেন ইলাইন। কিন্তু এক বছরেই ডিভোর্স হয়ে যায় তাঁদের। তার পর থেকে তিনি স্কটল্যান্ডেই থাকেন। গত দশ বছর তিনি নিজের দেশে অর্থাৎ ব্রাজিলে ফেরেননি। ইলাইন খুব প্রয়োজন না পড়লে ঘর থেকে বেরোন না। বেরোলেও সারা শরীর, মুখ ঢেকে রাখেন। কারণ তাঁকে আঘাত করে গয়নাগুলি চুরি হয়ে যেতে পারে বলে ভয় পান তিনি।
উপার্জনের জন্য একটি পার্লার চালান তিনি। সেখানে অন্যদের পিয়ার্সিংও করিয়ে দেন কখনও কখনও। ভালবেসে সকলে তাঁকে ডাকে ‘কালো রাজকন্যা’ বলে।