শেষ আপডেট: 3rd October 2023 11:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ছিল একখানা সাদামাটা অফিস, তাও আবার গলির ভিতর। কিন্তু মাত্র ৫ বছরে তার ভোল বদলে গেছে। ছোট্ট অফিসের জায়গায় এখন মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে বিশাল অট্টালিকা। সেটাই নাকি এখন বোলপুরের তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়। কী নেই সেখানে! ৩ তলা ভবনে রয়েছে অত্যাধুনিক সব ব্যবস্থা, সামনের কাঁচা পথ এখন পাকা, চওড়া রাজপথ। আর সেখান দিয়েই দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতেন বীরভূমের অবিসংবাদী তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল।
বিলাসবহুল সেই পার্টি অফিসের ভিতরেই রয়েছে শ্যামাকালীর মন্দির। পরিচিতরা সকলেই জানেন, অনুব্রত ছিলেন কালীভক্ত। মহাধুমধামে সেই কালীর পুজো করতেন তিনি। নিজের হাতে পরিয়ে দিতেন চোখ ধাঁধানো সোনার গয়না। সব মিলিয়ে সেই গয়নার ওজন নাকি ৫৬০ ভরি। বর্তমান বাজারমূল্য ধরলে যার দাম প্রায় ৩৭ কোটি টাকা। মায়ের সেই গয়না এবং পার্টি অফিসের উপরেই এবার নজর পড়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের। সূত্রের খবর, কোটি কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হয়েছিল এই পার্টি অফিস। আহমদপুরের এক চালকল ব্যবসায়ী নাকি এই ভবন নির্মাণে কয়েক কোটি টাকা দান করেছিলেন। কিন্তু কেনই বা তিনি তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় নির্মাণে এত টাকা দান করলেন, তা নিয়েই সন্দিহান ইডি। পার্টি অফিস তৈরির টাকা, এবং অনুব্রতর কালী মায়ের গয়নার উৎস সন্ধানে এবার ট্রাস্ট্রি বোর্ডের ৩ সদস্য এবং বোলপুরের এক আইনজীবীকে আজ মঙ্গলবার দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে জিজ্ঞসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
সূত্রের খবর, ট্রাস্ট্রি বোর্ডের ৩ জন সদস্য হলেন বোলপুরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শিবনাথ রায় ওরফে ক্যাবলা, বোলপুর পুরসভার স্যানিটারি বিভাগের কর্মী সুদীপ ভট্টাচার্য ও পরিবহণ বিভাগের কর্মী কাজল মণ্ডল। তলব করা হয়েছে আইনজীবী গৌতম হাটি ওরফে তপুকেও। এই চারজনই গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়া তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এই ৪ জনকেই দিল্লিতে তলব করেছে ইডি। সূত্রের খবর, পার্টি অফিস তৈরিতে বিপুল অঙ্কের টাকা দান করার পিছনে ওই চালকল ব্যবসায়ীর কারণ কী, আর্থিক লেনদেনের ঘটনায় তাঁরা যুক্ত কিনা, অনুব্রতর কালী প্রতিমার গয়না কারা কারা দান করেছিলেন, সেই সমস্ত বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তাঁদের।
গরু পাচার মামলায় এখনও জামিন পাননি অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল। দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি রয়েছেন দুজন। এই ঘটনায় অনুব্রতর আর্থিক লেনদেনের বিষয়গুলি খতিয়ে দেখতে গিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছিল অনুব্রতর অ্যাকাউট্যান্ট মনীশ কোঠারিকে। তবে সম্প্রতি জামিনে মুক্তিই পেয়েছেন তিনি। তারপরেই ফের অনুব্রতন ঘনিষ্ঠ ৪ জনকে নতুন করে ইডি ডেকে পাঠানোয় শোরগোল পড়েছে রাজ্য-রাজনীতিতে।