শেষ আপডেট: 6 January 2024 10:01
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিপুল লেনদেন, বেআইনি বেচাকেনার হিসাবনিকাশ। মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারের পর রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলার তদন্তে ক্রমশ জাল বিছোচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক তথ্য। দুর্নীতির সীমা যে কতদূর বিস্তৃত, তা খোদ তদন্তকারীরাও বুঝে উঠতে পারছেন না। টাকার অঙ্কে ডানদিকে ক্রমশ ‘শূন্য’ বেড়ে চলেছে। শনিবার আদালতে ইডি দাবি করল, রেশন দুর্নীতির অঙ্ক এক আধ হাজার কোটি টাকা নয়, কম করে ৯ থেকে ১০ কোটি টাকা লুঠ হয়েছে।
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় শুক্রবার রাতে ইডি গ্রেফতা করেছেন বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য। প্রায় ১৭ ঘণ্টা ধরে তল্লাশির পর শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ এই নেতার বাড়ি তল্লাশি এবং তাঁকে জেরা করে দুর্নীতির আরও তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি ইডির।
শনিবার শঙ্করকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। সেখানে একের পর এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আইনজীবী। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, শঙ্কর আঢ্যর কোম্পানির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা বিদেশে চলে যায়। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ১০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরেন ইডি কর্তারা। হাওলা রুটে এই টাকা বিদেশে পাঠানো হয়েছে।
ইডি সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে ৯০টি কোম্পানির নাম পাওয়া গিয়েছে। যার মাধ্যমে রাজ্যের রেশনের টাকা বিদেশে চালান হত। ২ হাজার কোটি দুবাই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি ইডির। তাঁরা দাবি করেছেন, যে বিপুল টাকা দিনের পর দিন বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে তা দিয়ে যে 'দেশ বিরোধী কাজ' করা হয়নি তারই বা কী প্রমাণ রয়েছে!
এখানেই শেষ নয়, জ্যোতিপ্রিয়র চিঠি থেকে শঙ্কর আঢ্যর নাম পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। রেশন দুর্নীতিতে কার কাছ থেকে কত টাকা নিতে হবে এবং কত টাকা দিতে হবে, চিঠিতে সেই উল্লেখ রয়েছে। এমনকী হাসপাতালের চেম্বারে বসে মন্ত্রীর সমস্ত পরিকল্পনা করেন বলেও অভিযোগ ইডির।
রেশন দুর্নীতির পুরো হিসেব কষে উঠেত পারেনি ইডি। কলকাতার আঞ্চলিক ইডি দফতর থেকে এ ব্যাপারে দিল্লিতে তাদের হেড কোয়ার্টারে একটি রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে বলে খবর। তাতে বলা হয়েছে, রেশন দুর্নীতিতে বাকিবুর একাই ১০০০ কোটি টাকা কামিয়েছেন। গত ১০ বছরে তিনি এই বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন বলে দাবি ইডির। বাকিবুরের মতো সুবিধাভোগী আরও মিল মালিক রয়েছেন। ফলে সবমিলিয়ে রেশনে চুরির অঙ্কটা অনেক বড় হয়ে উঠতে পারে।