শেষ আপডেট: 4 March 2024 11:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সোমবার রাজ্যে এসেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করে সব রাজনৈতিক দলগুলি। সেই বৈঠকে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রসঙ্গ ওঠে। কীভাবে সেই ভোটে হিংসার ঘটনা ঘটেছিল, কত রাজনৈতিক কর্মী খুন হন, সেই তথ্য নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি রাজ্যের পুলিশ কর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করে কমিশন। সেখানেই সিভিক পুলিশের প্রসঙ্গে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন তাঁরা।
গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে সিভিক ভলেন্টিয়ার ইস্যুতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞাবমের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে, ভোটে নিরাপত্তার কাজে সিভিক ভলান্টিয়ারদের কোনও ভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। পরে রাজ্য নির্বাচন কমিশন হলফনামা দিয়ে হাইকোর্টকে জানিয়েছিল, সিভিক ভলান্টিয়াররা বুথ পাহারা দেবেন না। তাদের নিরাপত্তার কাজেও ব্যবহার করা হবে না। তাঁরা শুধু বুথের বাইরে লাইন ঠিক করবেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশন সোমবার স্পষ্ট করে দিয়েছে, প্রত্যক্ষ হোক কিংবা পরোক্ষ, কোনও ভাবেই ভোটের কাজে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের ব্যবহার করা যাবে না।
রাজ্য পুলিশের সঙ্গে বৈঠকে সিভিক ভলেন্টিয়ার এবং গ্রিন পুলিশ সম্পর্কে তথ্য চায় কমিশন। সূত্রের খবর, সেই নিয়ে যুক্তিযুক্ত কোনও তথ্য কমিশনকে দিতে পারেনি পুলিশ। বরং পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের উত্তরে ক্ষোভ প্রকাশ করে কমিশনের ফুল বেঞ্চ। এরপরই তাঁরা স্পষ্ট জানায়, এদের ভোটের কোনও কাজে লাগানো যাবে না। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটের লাইন ব্যবস্থাপনা আর নাকা পয়েন্টে ব্যবহার করা হয়েছিল সিভিকদের। তবে পোলিং বুথের মধ্যে তাঁদের ঢোকা নিষেধ ছিল।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের নেতৃত্বাধীন ফুল বেঞ্চ সোমবারের বৈঠকে সব জেলার পুলিশ সুপার, জেলা শাসক ও পুলিশ কমিশনারদের কার্যত ধমকও দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সন্দেশখালি কাণ্ড সারা দেশেই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। পরোক্ষে সেই নিয়েও বার্তা দেওয়া হয়েছে রাজ্য পুলিশকে। সূত্রের খবর, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পুলিশের উদ্দেশে বলেন, ''মনে করবেন না যে আমরা কিছু না জেনে বসে আছি। আমাদের কাছে সব রিপোর্ট রয়েছে। সেই সঙ্গে কমিশনের কর্তারা স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, ভোটের আগে বাংলায় যেন বোমাবাজির কথা না শোনা যায়। এ ব্যাপারে পুলিশকে আগাম যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা নিতে হবে।''
সোমবারের বৈঠকে বিরোধীরা গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক ভোট লুট এবং হিংসার কথা তুলে ধরেছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে তো আগে থেকেই প্রশ্ন ছিল। বিরোধীরা দাবি করেছিল, কমিশন পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছিল হিংসা আটকাতে। তাই আসন্ন ভোটে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার সবরকম প্রয়াস চালানো হচ্ছে। ভোট ঘোষণার আগে চলতি সপ্তাহেই মোট ১৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে চলে আসছে, যা নজিরবিহীন বটে। এই অবস্থায় সিভিক ভলেন্টিয়ারদের নিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।