শেষ আপডেট: 15th November 2021 11:01
আগে জেলের খাবার খান, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সাফ বলল কোর্ট
দ্য ওয়াল ব্যুরো : টাকা তছরুপের দায়ে গত ১ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা শীর্ষস্থানীয় এনসিপি নেতা অনিল দেশমুখকে (Anil Deshmukh) গ্রেফতার করে ইডি। সোমবার তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেপাজতে পাঠানো হল। ৭১ বছর বয়সী অনিল আর্জি জানিয়েছিলেন, তাঁকে যেন জেলে বাড়ির খাবার খেতে দেওয়া হয়। কিন্তু বিশেষ আদালতের বিচারক বলেন, আপনি আগে জেলের খাবার খান। যদি খেতে না পারেন, তখন আপনার আর্জি বিবেচনা করব। জেল হেপাজতে তাঁকে খাটে শুতে দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন অনিল। বিচারক এই আর্জি মঞ্জুর করেছেন। মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিং অভিযোগ করেছিলেন, অনিল টাকা তছরুপ ও তোলাবাজিতে জড়িত। তিনি নাকি সাসপেন্ড হওয়া পুলিশকর্তা শচিন ওয়াজেকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, মুম্বইয়ের বিভিন্ন রেস্তোরাঁ থেকে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে হবে। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে চলতি বছরের শুরুতেই মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয়েছিল অনিল দেশমুখকে। ইডি-র হাত এড়ানোর জন্য বম্বে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন দেশমুখ। কিন্তু হাইকোর্ট তাঁর আবেদন নাকচ করে দেয়। পরে এক ভিডিও বার্তায় দেশমুখ বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির বাড়ির কাছে বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি রাখার ঘটনার পরে পরমবীর সিংকে মুম্বইয়ের পুলিশ প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ উঠেছিল, ওই ঘটনার তদন্ত যথাযথভাবে হচ্ছে না। দেশমুখ বলেছিলেন, পরমবীর সিং-এর নেতৃত্বে ওই তদন্তে এমন কিছু গাফিলতি হয়েছে যা অমার্জনীয়। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হুমকি দিয়েছিলেন, তিনি পরমবীর সিং-এর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবেন। এর মধ্যে তৎপর হন বিরোধীরা। তাঁরা দেশমুখের পদত্যাগের দাবি তোলেন। কিছুদিন আগে পরমবীর সিং নিখোঁজ হয়েছেন। তাঁর নামে জারি হয়েছে লুক আউট নোটিশ। তাঁর বিরুদ্ধেও তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছে। কয়েকটি মামলাও করা হয়েছে। গত সোমবার দেশমুখ বলেন, "মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার গেলেন কোথায়? তিনিই তো আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন। এখন তাঁর নিজের দফতরের কয়েকজন অফিসার এবং কয়েকজন ব্যবসায়ী তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।" ইতিমধ্যে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারকে পলাতক ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতর। প্রাক্তন আইপিএস অফিসারকে পলাতক ঘোষণা করার আইনি প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। আইনি পদ্ধতি, প্রক্রিয়া মেনে যাতে এই উদ্যোগে বিন্দুমাত্র ফাঁকফোকর না থাকে, সেজন্য আইনি পরামর্শও চেয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতর। চলতি বছরের মে মাস থেকে তিনি নিখোঁজ। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে তাঁকে সাসপেন্ড করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অ্যান্টিলা বোমাতঙ্ক মামলায় তদন্তে ঘাটতির জন্য পরমবীরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র দফতর। স্বাস্থ্যের কারণে ছুটিতে গিয়েছিলেন পরমবীর। তারপর থেকেই তিনি বেপাত্তা। তাঁর চন্ডীগড়ের বাড়িতে একাধিকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। তিনি কোথায়, জানতে চেয়ে ইমেলও পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কোনও উত্তরই আসেনি। গত মাসে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিলীপ ওয়ালসে পাটিল বলেছিলেন, তাঁরা অল ইন্ডিয়া সার্ভিসেস (কনডাক্ট) রুলস অনুসারে পরমবীরের বিরুদ্ধে কী কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে, তা খতিয়ে দেখছেন।