শেষ আপডেট: 26th September 2023 12:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহামেডান স্পোর্টিংয়ের বিরুদ্ধে গত ম্যাচে হেরে কলকাতা লিগ (Kolkata League) জয়ের দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে ইস্টবেঙ্গল এফসি (East Bengal)। তবে সেই হার থেকে শিক্ষা নিয়ে মঙ্গলবার সুপার সিক্সের দ্বিতীয় ম্যাচেই খিদিরপুরকে বড় ব্যবধানে হারালো বিনো জর্জের ছেলেরা। দু'জন প্লেয়ারের হ্যাটট্রিক-সহ ইস্টবেঙ্গল মোট ১০ গোলের মালা পরাল খিদিরপুরকে। ম্যাচ শেষে স্কোরলাইন ১০-১। তবে এই ম্যাচেই অল্পের জন্য একটি রেকর্ড হাতছাড়া করল লাল হলুদ ব্রিগেড।
মঙ্গলবার ক্লাব মাঠেই খিদিরপুরের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের শুরুতেই তারা প্রথম ধাক্কা দেয় খিদিরপুরকে। ৬ মিনিটের মাথায় নিজের এবং দলের হয়ে প্রথম গোলটি করেন পিবি বিষ্ণু। সেই ধাক্কা কাটিয়ে খিদিরপুর যখন ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু করছে, সেই সময় আবার একটি গোল বিষ্ণুরই। ম্যাচের সময় তখন সবেমাত্র ১০ মিনিট। দু'গোলে পিছিয়ে পড়ে খিদিরপুর টিমের তখন নাজেহাল অবস্থা।
আর তখনই একের পর এক আক্রমণে বিপক্ষের ডিফেন্সে রীতিমতো ঝড় তুলেছে ইস্টবেঙ্গল এফসি। খিদিরপুর তখন নিজেদের গোল বাঁচাবে নাকি গোল শোধের চেষ্টা করবে ভাবছে, তখন বিপক্ষের কফিনে আরও একটি পেরেক পুঁতে দেন সেই বিষ্ণু। ৩৮ মিনিটের মাথায় নিজের হ্যাটট্রিক সেরে ফেলেন তিনি। সেই সঙ্গে দলকে এগিয়ে দেন ৩-০ ব্যবধানে।
ম্যাচের প্রথম ৪০ মিনিট যদি হয় বিষ্ণুর, তাহলে প্রথমার্ধের শেষ কয়েক মিনিট নিঃসন্দেহে মহিতোষ রায়ের। কারণ এই ৬-৭ মিনিটে মহিতোষের আস্ফালনে বিপক্ষ শিবির তখন পুরোপুরি বিধ্বস্ত। ইস্টবেঙ্গল দলের এই তরুণ তুর্কি মাত্র ৭ মিনিটের মধ্যে সেরে ফেলেন নিজের হ্যাটট্রিক। ৪১ মিনিট, ৪৫ মিনিট এবং অতিরিক্ত সময়ের দু'মিনিটে তিনি তিনটি গোল করে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে দেন। যদিও এই সময়েই খিদিরপুর একটি গোল শোধ করে। এই ৬-১ ব্যবধানেই প্রথমার্ধ শেষ করে ড্রেসিংরুমে ফেরে দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হওয়ার পর আরও একবার জ্বলে উঠলেন পিবি বিষ্ণু। ৫১ মিনিটের মাথায় নিজের চতুর্থ গোল করে তিনি ৭-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন দলকে। এরপর আর কোনওভাবেই খিদিরপুরের পক্ষে ম্যাচে ফেরা সম্ভব ছিল না। বিশাল ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে খিদিরপুর টিমের তখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা। আর ওই সময়েই নিজেদের গোল পার্থক্য আরও বাড়িয়ে নিতে রীতিমতো ঝাঁপিয়ে পড়ে লাল হলুদ শিবির।
৫৪ মিনিটে গোল করেন জেসিন টিকে। দু'মিনিট পর ফের গোল ইস্টবেঙ্গলের। এবার ভিপি সুহের। সিনিয়র দলের হয়ে তিনি নিয়মিত সুযোগ না পেলেও কলকাতা লিগে সুপার সিক্সে তাঁকে খেলাচ্ছে দল। এদিন সুযোগ পেয়ে গোল করতে ভুল করলেন না এই মালয়ালি ফুটবলারটি। এরপর ৮২ মিনিটে দলের হয়ে সর্বশেষ এবং নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে যান সেই সুহের। ১০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে তখন খিদিরপুর কোনওরকমে ম্যাচ শেষ করতে পারলে বাঁচে। বাকি সময়ে আর স্কোরলাইন পাল্টায়নি।
উল্লেখ্য, এর আগে কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গলের দু'বার ১০-০ ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড রয়েছে। ১৯৪৩ সালে ডালহৌসিকে এবং ১৯৪৯ সালে ক্যালকাটা গ্যারিসন ক্লাবকে ইস্টবেঙ্গল এই বিরাট ব্যবধানে হারিয়েছিল। এত দশক পর এদিন সেই রেকর্ড ভেঙে দেওয়ার সুযোগ এসেছিল লাল হলুদের কাছেই। মঙ্গলবার ঘরের মাঠে নিজেদের সেই রেকর্ড ছুঁতে পারলেও অল্পের জন্য তা ভাঙতে পারলেন না বিনো জর্জের ছেলেরা।
জামসেদপুরের কাছে আটকে গেল ইস্টবেঙ্গল, ড্র করে আইএসএলে যাত্রা শুরু লাল-হলুদ ব্রিগেডের