শেষ আপডেট: 16th January 2025 17:32
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চিকিৎসকদের গাফিলতিতেই মেদিনীপুরে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক থেকে একথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, "এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। যাদের হাতে সন্তানদের জন্ম হয়, মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ হয়, তাঁরা সেদিন মেদিনীপুরে নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেননি। তা না হলে এই মাকে এবং এক সন্তানকে বাঁচানো যেত।"
২০১১ সালে পালা বদলের পর রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা ও পরিকাঠামোয় যে আমূল বদল হয়েছে তাও পরিসংখ্যান তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "অনেকে বলে তুলো ছাড়া সরকারি হাসপাতালে নাকি কিছু পাওয়া যায় না। ২০১০-১১ সালের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য। কিন্তু এখন সব দিক থেকে রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা সারা দেশের মধ্যে ভাল। এটা আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি।"
ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমরা পরিকাঠামোর উন্নয়ন করতে পারি। কিন্তু চিকিৎসা পরিষেবার দায়িত্ব তো চিকিৎসকদের পালন করতে হবে।"
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে স্বাস্থ্য দফতরের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল মেদিনীপুরে প্রসূতি মৃত্যুর তদন্ত করছে। পাশাপাশি তদন্ত করছে সিআইডিও। এদিন তাদের জমা দেওয়া দুটি রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রকাশ্যে আনেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ।
মুখ্যসচিব জানান, দুটি রিপোর্টেই মেদিনীপুরে চিকিৎসকদের গাফিলতির তথ্য উঠে এসেছে। সেদিন আরএমও এবং কল ডিউটিতে যে ডাক্তাররা ছিলেন তাঁরা ওটিতে দেখতে যাননি। চিকিৎসক সৌমেন দাসকে ডাকা হলেও তিনি একবার দেখেই চলে গিয়েছিলেন। জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে অপারেশন করা অ্যানাস্থেসিয়া সিনিয়র ডাক্তারদের দিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। সেটাও পিজিটিকে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ পুরো প্রক্রিয়ায় গাফিলতি ছিল। এমনকী রোগীর বাড়ির লোককে দিয়ে জোর করে মুচলেকাও লেখানো হয়েছিল।
প্রসূতি মৃত্যুুর ঘটনায় ইতিমধ্যে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে জনমানসে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মানুষের এই ক্ষোভের মধ্যে কোনও ভুল দেখছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, "যিনি স্ত্রী হারা হলেন, যাদের পরিবারের মানুষ মারা গেলেন, তাঁরা তো সরকারকেই দায়ী করবে। এতে কোনও অন্যায় নেই। ভুল আমাদের, সেজন্য আমাদের গালাগালি সহ্য করতে হবে। তবে যারা দায়িত্বে গাফিলতি করেছেন, তাদের বরদাস্ত করার প্রশ্নই নেই।"