চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী।
শেষ আপডেট: 13 October 2024 06:39
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাবাকে ডিসচার্জ করে বাড়ি নিয়ে যেতে সাত সকালে বাঁকুড়া থেকে এসএসকেএমে পৌঁছেছিলেন এক যুবক। রবিবার সকালে এসএসকেএমে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের জেরে মাথায় গভীর ক্ষত নিয়ে হাসপাতালের শয্যায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন সেই যুবক।
হাসপাতালের মধ্যে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ।এ ব্যাপারে এবার বড় প্রশ্ন তুললেন চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী। আরজি কর কাণ্ডের প্রথম থেকেই স্বাস্থ্যক্ষেত্রের দুর্নীতি নিয়ে সরব চিকিৎসক সুবর্ণ। এদিন বললেন, "হাসপাতালের দুর্নীতি বন্ধ না হলে কেউ নিরাপদ নয়।"
ক'দিন আগেই বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের লেডিজ হস্টেলের বাথরুমের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি। তাকে অশালীন অবস্থায় দেখতে পান ডাক্তারি ছাত্রীরা। ওই প্রসঙ্গ টেনে চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, "বাঁকুড়ার ঘটনা বা এদিন এসএসকেএমে যে ঘটনা ঘটল, তার কোনওটায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আসলে হাসপাতালগুলিকে যতদিন না দুর্নীতি মুক্ত করা যাবে ততদিন এ জিনিস চলতে থাকবে। যতদিন দালাল চক্র সক্রিয় থাকবে ততদিন চিকিৎসক থেকে রোগী, কেউই নিরাপদ থাকতে পারবেন না।"
রেলের যেমন বিশেষ সুরক্ষা বাহিনী রয়েছে, সেই ধাঁচে রাজ্যের প্রতিটি হাসপাতালে বিশেষ সুরক্ষা বাহিনী গড়ে তোলার দাবিও তোলেন তিনি। তাঁর কথায়, "আসলে সবটাই নির্ভর করে সরকারের সদিচ্ছার ওপর। সরকার চাইলে কিন্তু অনেক কাজই করতে পারে।"
এদিন সকাল সওয়া ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে এসএসকেএের ট্রমা কেয়ার সেন্টারের সামনে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দু'পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। মাঝে পড়ে গুরুতর জখম হন বাঁকুড়ার এক রোগীর আত্মীয়। বাবাকে ডিসচার্জ করাতে এদিন হাসপাতালে এসেছিলেন তিনি। তাঁকে অপরগোষ্ঠীর লোক ভেবে মাটিতে ফেলে হকিস্টিক, উইকেট দিয়ে বেধড়ক মারধর করে দুষ্কৃতীরা। তাঁর মাথায় গুরুতর ক্ষত তৈরি হয়েছে।
গোটা ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের কথায়, "যে দাবিতে গত ২ মাসের বেশি সময় ধরে জুনিয়র চিকিৎসকরা পথে বসে রয়েছেন, ৯ দিন ধরে অনশন চলছে, সেই নিরাপত্তার দাবি তো এখনও খাতায় কলমেই রয়ে গেছে। তা না হলে সরকারি হাসপাতালের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটে কী করে?"
মনে করা হচ্ছে, বাইরের ঝামেলার জেরে এদিন এক গোষ্টী অপর গোষ্ঠীকে 'শিক্ষা' দিতে হাসপাতালে এসেছিল। আর এখানেই উঠছে নিরাপত্তার প্রশ্ন। চিকিৎসকদের সুরে রোগীর আত্মীয়রা বলেন, "উইকেট, হকিস্টিক নিয়ে বিনা বাধায় একটা সরকারি হাসপাতালের মধ্যে ঢুকে পড়ল দুষ্কৃতীরা। তাঁদের দেখে রক্ষীরা পালিয়ে গেল! এরপরও বলবেন, সরকারি হাসপাতাল সুরক্ষিত?"