কসবা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রকে নিয়ে আদালতে পুলিশ বক্তব্য ঘিরেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বলা হয়েছে, সে প্রভাবশালী, তার যেন জামিন না হয়।
দিলীপ ঘোষ
শেষ আপডেট: 3 July 2025 06:12
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগের ঘটনা। বোলপুরের আইসিকে ফোনে কুকথা বলে সংবাদ শিরোনামে এসেছিলেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। পুলিশের মা-বোন তুলে চূড়ান্ত নোংরা কথা বলেও অবশ্য তিনি গ্রেফতার হননি। এই ঘটনার পর কসবা ল কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন তিনজন যুব তৃণমূল নেতা। বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) দুটি ইস্যুকে মিলিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, অনুব্রত মুখে যা বলেছিলেন, এরা সেটাই করে দেখিয়েছেন।
কসবার ঘটনায় (Kasba Law Incident) গ্রেফতার হয়েছেন মনোজিৎ মিশ্র, যিনি আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিস করছিলেন এবং কলেজেও চুক্তিভিত্তিক কর্মী ছিলেন। বাকি দুই অভিযুক্ত জইব আহমেদ এবং প্রমিত মুখোপাধ্যায় কলেজেরই বর্তমান পড়ুয়া। দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, এরা আদতে তৃণমূলের গর্ব। এদের সম্মান দেওয়া উচিত দলের পক্ষ থেকে! কেন এমন বললেন তিনি, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি।
দিলীপ বলছেন, ''মনোজিতের মতো লোকেরা পুলিশকে চালায়। কলেজের রাশও তাদের হাতে। কে চাকরি করবে, কে করবে না, কে পাশ করবে, করবে না, সব সিদ্ধান্ত তাদের। প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল সকলেই ওদের কথা মতো চলেন। এদের কোনও ক্ষমতা নেই।'' বিজেপি নেতার আরও সংযোজন, ''তৃণমূলের তরফেও ওদের মতো নেতাদের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। যাতে অনায়াসে তারা ঢুকতে-বেরতে পারে। আদতে ইউনিয়ন রুমগুলি এক-একটি তৃণমূল পার্টি অফিস। সেখানে মদ-গাঁজা, জুয়া, ধর্ষণের আসর বসে।''
অনুব্রত কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে দিলীপের বক্তব্য, ''পুলিশকে হুমকি দিয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। কী করবেন, কী না করবেন মুখে বলেছিলেন। আর এদিকে মনোজিতরা তা করে দেখিয়েছেন। তাই তৃণমূলের উচিত তাদের পুরষ্কার দেওয়া। কারণ এরা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে।''
ইতিমধ্যে আবার কসবা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রকে নিয়ে আদালতে পুলিশ বক্তব্য ঘিরেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বলা হয়েছে, সে প্রভাবশালী, তার যেন জামিন না হয়। পুলিশের তরফে সাফ জানানো হয়েছে, মূল অভিযুক্ত অত্যন্ত প্রভাবশালী। তাঁর জামিন মঞ্জুর হলে গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া বিপন্ন হতে পারে। এমনকী, সাক্ষীদের ভয় দেখানো, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
পুলিশ এমন দাবি করায় স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে, তদন্তে কি প্রশাসনিক বা রাজনৈতিক প্রভাব পড়তে পারে? মূল অভিযুক্তের পরিচিতি নিয়ে যেভাবে গুঞ্জন চলছে, তা কি এ বার পরোক্ষে মেনে নিল পুলিশও?