শেষ আপডেট: 8th January 2025 14:52
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ব্রাত্য বসু থেকে দেব, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সায়ন্তিকা, বুধবার ধনধান্য স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সকলের 'ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি' হাল হওয়ার জোগাড়!
ভরা মঞ্চে ঘাটালের সাংসদ-অভিনেতা দেব ওরফে দীপক অধিকারীর অকপট স্বীকারোক্তি, "সিএমের সামনে সত্যি আমার সব গুলিয়ে যায়!" এরপরই আমতা আমতা করে দেবকে বলতে শোনা যায়, "একটা গান আমার মাথায় এসেছে, কিন্তু এটা গাইলে এখন থেকেই ট্রোল হতে শুরু করব!"
নাছোড় মমতা বলেন, "এসব বলে তুমি পাশ কাটাতে পারবে না। গান তোমাকে গাইতেই হবে!" এরপরই দেব গেয়ে উঠলেন, "হে ইউ, লিসেন টু মি, ইউ আর মাই লাভ, ইউ আর মাই লাভ, ও মধু, ও মধু, আই লাভ ইউ...।"
১ থেকে ৭ জানুয়ারি স্টুডেন্টস উইক ডে পালিত হয়েছে রাজ্যের প্রতিটি স্কুলে। সেই উপলক্ষ্যে এদিন ধনধান্য স্টেডিয়াম থেকে বিভিন্ন কৃতী পড়ুয়াদের পুরষ্কৃত করেন মমতা। ওই অনুষ্ঠানেই বক্তৃতা দেওয়ার পরিবর্তে প্রথমে ব্রাত্য বসু থেকে দেব, রচনা থেকে সায়ন্তিকা, সকলকে ২ লাইন করে গান গাওয়ার অনুরোধ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
শুরুতে 'আগুনের পরশমনি' গান বিধায়িকা সঙ্গীত শিল্পী অদিতি মুন্সি। এরপরে মমতার অনুরোধে 'তোমায় হৃদ মাঝারে রাখব' (লোক সঙ্গীত) গান সায়নী। এরপরই ডাক পড়ে মেদিনীপুরের সাংসদ জুন মালিয়া, বরাহনগরের বিধায়িকা সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সোম চক্রবর্তীদের। সোহম স্বরচিত কবিতা পাঠ করে দায় সারেন।
জুন, সায়ন্তিকারা বলেন, "আমরা যখন স্কুল পড়তাম তখন দিদির মতো কেউ ছিল না এভাবে উৎসাহ দেওয়ার।" গান গান মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ও।
এরপরই ডাক পড়ে আর এক মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের। পরিচয় দিতে গিয়ে মমতা বলেন, "ইন্দ্রনীল কোনও দিন প্র্যাকটিস করে না। হারমোনিয়াম শেখিন। ইঞ্জিনিয়রিং থেকে চলে এসেছে গানের জগতে। ইশ্বরপ্রদত্ত কণ্ঠস্বর রয়েছে ওর।"
এরপরই সকলকে চমকে দিয়ে ইন্দ্রনীল বলেন, "এখানে আগে এই গানটা নিয়ে ছেলের সঙ্গেও ঝামেলা হয়েছে, তবু আমি এই গানটাই গাইব। বলেই জানতে চান, রুবি এসেছে?" এরপরই গেয়ে ওঠেন, 'মনে পড়ে রুবী রায়, কবিতায় তোমাকে..."।
মুহূর্তে চরম উন্মাদনার পরিবেশ দেখা যায় স্টেজের উল্টো দিকে উপস্থিত পড়ুয়াদের মধ্যে। মুচকি হেসে ইশারায় সকলকে দেখে নেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানও। ইন্দ্রনীলের তারিফ করে মুখ্যমন্ত্রীকেও এও বলতে শোনা যায়, "জমিয়ে দিয়েছে!"
এরপরই ডাক পড়ে মন্ত্রী তথা নাট্যকার ব্রাত্য বসুর। আত্মসমপর্ণের ঢঙে ব্রাত্য বলেন, "গান গাইতে পারব না, গান বলব!" আপত্তি জানান মুখ্যমন্ত্রী-সহ অন্যরা। সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন ইন্দ্রনীল। এরপরই ইন্দ্রনীলের সঙ্গে ব্রাত্য গেয়ে ওঠেন, "রোদ জ্বালা দুপুরে, সুর তুলে নুপুরে...!"
সব শেষে দেব। ঘাটালের তিনবারের সাংসদ শুরুতেই সলজ্জ কন্ঠে বলেন, "২০১১ সালে শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে আমি ভুল করে পাগলু গানটা গেয়ে ফেলেছিলাম!" এ সময় রসিকতা সুরে ইন্দ্রনীল বলেন, "কে তুমি নন্দিনী গানটা গা, যেটা আমার সামনে একবার গেয়েছিলি!" অবাক হয়ে দেব জানতে চাই, 'কবে গাইলাম?' চাপের মুখে পড়ে ইন্দ্রনীলের 'কে তুমি নন্দিনী' গানে অল্প সুর মেলান দেব। এরপরই ও মধু, আই লাভ ইউ...! মঞ্চের নীচে তখন বসন্তের উন্মাদনা!