শেষ আপডেট: 3rd February 2024 20:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চব্বিশের লোকসভা ভোটে অভিনেতা দেব তথা দীপক অধিকারী তৃণমূলের প্রার্থী হবেন কিনা তা নিয়ে তিনি নিজেই কৌতূহল জিইয়ে রেখেছিলেন। জানা গিয়েছে, ঘনিষ্ঠ মহলে দেব অনেককেই বলেছেন যে তিনি আর লোকসভা ভোটে প্রার্থী হতে চান না।
এই সাত পাঁচ পরিস্থিতির মধ্যে শনিবার তিনটি কমিটি থেকে ইস্তফা দিলেন দেব। বীরসিংহ ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন দেব। সেই পদ থেকে তিনি এদিন ইস্তফা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ঘাটাল হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদ এবং ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহা বিদ্যালয় এর প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন এই তৃণমূল নেতা।
এই তিন পদ থেকে দেব ইস্তফা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শাসক দলের মধ্যে নতুন কৌতূহল শুরু হয়েছে। বাংলা থেকে রাজ্যসভার ৫টি আসন শূন্য হতে চলেছে। সেই কারণে ফেব্রুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ ভোট হবে। তার আগে ১৫ তারিখের মধ্যে মনোনয়ন পেশ করতে হবে। ফলে দেব এদিন তিন কমিটি থেকে ইস্তফা দিতেই অনেকে মনে করছেন, হতে পারে এর সঙ্গে রাজ্যসভার নির্বাচনের যোগ রয়েছে। কে জানে, দেবকে হয়তো রাজ্যসভা ভোটে প্রার্থী করে দেবেন মমতা।
লোকসভা বা রাজ্যসভার প্রার্থী হতে গেলে কোনওরকম অফিস অফ প্রফিটের সঙ্গে যুক্ত থাকা যায় না। অর্থাৎ সরকারি কোনও পদ থেকে বেতন নিয়ে পদে থাকতে থাকতে প্রার্থী হওয়া যায় না। দেব এই সব কমিটি থেকে সম্ভবত কোনও ভাতা বা বেতন নিতেন না। কিন্তু এই তিন পদই ছিল তাঁর লোকসভা নির্বাচন কেন্দ্র ঘাটাল সংক্রান্ত। তিনি ঘাটালের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিলে সেখানকার উন্নয়ন পর্ষদ বা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির পদ দখল করে থাকা প্রাসঙ্গিক দেখায় না।
এখানে একটা বিষয় জানিয়ে রাখা ভাল, গত সাত-আট বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যসভার যে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছেন, তা দলের কেউই আগাম জানতে পারেনি। কোনও সংবাদমাধ্যম আগাম খবর প্রকাশ করতে পারেনি। ফলে এবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যসভা নির্বাচনে কাদের প্রার্থী করবেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
ফলে আগামী দিনে দেবের আসন সংসদের নিম্নকক্ষ থেকে বদলে উচ্চকক্ষে চলে যাবে কিনা তা শাসক দলের কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। শুধু ঘটনা পরম্পরা থেকে অনুমানের পালা চলছে।
এই অনুমানের পালা চলার কারণ রয়েছে। রাজ্যসভা নির্বাচনে বাংলার যে পাঁচটি আসনের জন্য ভোট হবে, বিধায়ক সংখ্যার জোরে তার মধ্যে চারটি পাবে তৃণমূল। একটি পাবে বিজেপি। বর্তমানে ওই পাঁচ আসনে প্রার্থী রয়েছেন শান্তনু সেন, শুভাশিস চক্রবর্তী, আবির বিশ্বাস, নাদিমুল হক এবং কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। শাসক দলের মধ্যে আলোচনা রয়েছে যে নাদিমুলের ফের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। বাকিদের ভাগ্য অনিশ্চিত। এই কারণেই দেবের ইস্তফা নিয়ে এত কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
মজার ব্যাপার ছিল, রেড রোডে ধর্না মঞ্চে এদিন উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ। এদিন তিনি বক্ততায় বলেন, আমি বাংলা বলতে পারি। সেই সময়ে মঞ্চে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কীর্তি বাংলা বলতে পারেন, কথাটা শুনেই দলের অনেকে পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করেন। ভাবটা এই যে, এও কি রাজ্যসভার দৌড়ে আছেন? কীর্তি যে মনোনয়ন পেতে আকুল তা নিয়ে কারও সন্দেহ নেই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে টিকিট দেবেন কিনা সেটাই প্রশ্ন।