শেষ আপডেট: 23 November 2023 00:11
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শিক্ষার মানোন্নয়নে চাহিদা বাড়ছে স্মার্ট ক্লাসরুমের। এবার পড়ুয়াদের মুখেও শোনা গেল একথা। শ্রেণিকক্ষে আরও বেশি করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে পড়াশোনার সুযোগের জন্য আবেদন জানাল তারা। ২০ নভেম্বর বিশ্ব শিশু দিবসে প্রতীকী শিক্ষকের ভূমিকা পালন করে পড়ুয়ারা। সেখানেই এই দাবি ওঠে।
ইউনিসেফের পশ্চিমবঙ্গ শাখার উদ্যোগে সোমবার কলকাতার যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুল এবং হাওড়ার উলুবেড়িয়ার আশা ভবন সেন্টারে ‘কিড’স টেকওভার’ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। যোধপুর বয়েজে প্রতীকীভাবে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসার সুযোগ পেয়েছিল স্কুলের ছাত্র সৈকত দে।
সৈকত বলে, “প্রতীকী প্রধান শিক্ষক হিসেবে আমি চাইছি, শিক্ষার মানোন্নয়নে ক্লাসরুমে আরও বেশি করে বিজ্ঞান, আধুনিক প্রযুক্তি ও গেজেট ব্যবহার করা হোক। তবেই শ্রেণিকক্ষ হয়ে উঠবে আরও আকর্ষণীয়। এতে পড়ুয়ারা পড়াশোনার বিষয়গুলি আরও ভালোভাবে বুঝতে ও আত্মস্থ করতে পারবে।” সৈকতের সঙ্গে সহমত তার সহপাঠীরা।
উলুবেড়িয়ার আশা ভবন সেন্টারে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসা মালা সিং মুড়া বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন শিশু। সে ক্রিকেট ও ফুটবল খেলতে পছন্দ করে। মালা মনে করে মেয়ে ও ছেলেদের সমানভাবে লেখাপড়া করার সঙ্গে খেলাধূলার অধিকার থাকা উচিত। প্রতীকী প্রধানশিক্ষক মালার কথায়, "স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে আমি ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলোতেও সুযোগ করে দিতে চাই।"
শুধু স্মার্ট ক্লাসরুম চালু করলেই হবে না পড়ুয়ারা মনে করছে, স্কুলস্তরেই তাদের মানসিক বিকাশের উপযোগী পরিবেশও গড়ে তোলা জরুরি। তাদের মতে, ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে যে কোনও ভেদাভেদ নেই, সেটা বোঝাতে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় আরও বেশি করে লিঙ্গ সাম্যের বিষয়ে জোর দেওয়া উচিত।
পড়ুয়াদের এদিনের আলোচনায় উঁচু ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বাড়তে থাকা ডিপ্রেশনের প্রসঙ্গও উঠেছিল। প্রতীকী প্রধান শিক্ষক সৈকত জানিয়েছে, “পড়ুয়াদের মানসিক চাপ ও ডিপ্রেশনের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে শিক্ষকদের এগিয়ে আসা উচিত। প্রয়োজনে মনোবিদদেরও সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন। আর এটার জন্য বছরভর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা জরুরি।"
ইউনিসেফের পশ্চিমবঙ্গ শাখার ভারপ্রাপ্ত প্রধান অমিত মেহরোত্রা বলেন, "এই রাজ্যে প্রাথমিক স্কুল স্তরে শিশুদের ভর্তির হার খুব ভাল। এখন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শ্রেণিকক্ষ ও ল্যাবরেটারির মানোন্নয়নের দিকে নজর দিতে হবে। শিল্পপতি ও বাণিজ্যমহলের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছে আরও স্মার্ট ক্লাসরুম গড়ে তোলার জন্য বিনিয়োগের অনুরোধ রাখছি। এতে শিশুদের প্রতিভার বিকাশ আরও সুন্দরভাবে হবে এবং তাদের ভবিষ্যৎকে সুনিশ্চিত করা যাবে।"
‘কিড’স টেকওভার’ কর্মসূচির প্রশংসা করে যোধপুর বয়েজের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার বলেন, “এই ধরণের কর্মসূচি শিশুদের আত্মবিশ্বাস ও নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা বাড়ায়। কারণ, পড়ুয়ারা কোন উচ্চপদে বসলে সেই পদের গুরুত্ব বুঝতে পারে এবং সেইভাবে ভাবনা চিন্তা করবার চেষ্টা করে।"