শেষ আপডেট: 20 January 2024 18:11
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জলে জঙ্গলে ঘেরা সুন্দরবন। জীবিকার প্রয়োজনে গভীর জঙ্গলে গিয়ে মাঝে মধ্যেই বাঘের আক্রমণের মুখে পড়েন বাসিন্দারা। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে।
২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর এরকমই একটি ঘটনায় মাছ ধরতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন সুন্দরবনের গোসাবার লাহিড়িপুর গ্রামের বাসিন্দা শম্ভু মণ্ডল এবং তাঁর বন্ধু রাধাকান্ত আউলিয়া।
ওই ঘটনার প্রায় সাড়ে চার বছর পরও বন দফতর থেকে ক্ষতিপূরণ পাননি মৃত দুই ব্যক্তির পরিবার। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত মামলার রায়ে বন দফতরের নিয়ম মেনে আবেদনকারী দুই 'ব্যাঘ্রবিধবা'কে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। আগামী ১৪ দিনের মধ্যে বন দফতরকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এদিন মামলার রায় পড়ে শোনানোর আগে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, বাঘে যদি মানুষকে মারে সেক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণ দেখালে বন দফতর ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য।
জানা গিয়েছে, সুন্দরবনের গোসাবার শম্ভু এবং তার বন্ধু ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর মাছ ধরতে গভীর জঙ্গলে গিয়েছিলেন। শম্ভুই প্রথম বাঘের আক্রমণের শিকার হন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারান তাঁর বন্ধু রাধাকান্ত। তবে শম্ভুর মৃতদের উদ্ধার হলেও রাধাকান্তর দেহ পাওয়া যায়নি। অনুমান, বাঘে তাঁর দেহ গভীর জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায়।
ঘটনার পর বন দফতর, পুলিশ এবং স্থানীয় পঞ্চায়েতকে পুরো বিষয়টি লিখিতভাবে জানান মৃত দুই ব্যক্তির পরিজনেরা। ময়না তদন্তের রিপোর্ট এবং পুলিশের দেওয়া তদন্ত রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসেবে বাঘের আক্রমণের উল্লেখ রয়েছে।
এদিকে ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বন দফতরের নির্দেশিকা অনুযায়ী বন্যপ্রাণীর আক্রমণে নিহতদের উত্তরাধিকারীরা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কিত প্রমাণ সাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ লক্ষ টাকা পাওয়ার অধিকারী। ওই আইনের কথা জানতে পারার পরই শম্ভুর স্ত্রী সরোজিনী এবং রাধাকান্তর স্ত্রী সরস্বতী ক্ষতিপূরণের জন্য বন দফতরে আর্জি জানান।
অভিযোগ, মৃত ব্যক্তিরা সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করেছিলেন, এই কারণ দেখিয়ে ক্ষতিপূরণের আর্জি খারিজ করে দেয় বন দফতর। এরপরে মহিলা কমিশনের পরামর্শে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই দুই 'ব্যাঘ্রবিধবা'। ওই মামলাতেই এদিন বন দফতরকে দ্রুত ক্ষতিপূরণমেটানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।