রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা এখন যে ১৮ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছেন, তার বাইরে মহার্ঘ ভাতা বাবদ এরিয়ার তথা বকেয়ার ২৫ শতাংশ তিন মাসের মধ্যে দিতে হবে তাঁদের।
শেষ আপডেট: 16 May 2025 16:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ (DA) তথা মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত মামলা গত প্রায় এক দশক ধরে ঝুলে রয়েছে। বিষয়টা এখন জটিলের থেকেও যেন জটিলতর। বৃহস্পতিবার ডিএ মামলার (Supreme Court DA Case) মাইলফলক অন্তর্বর্তী রায়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় করোল জানিয়ে দিয়েছেন, অন্ততপক্ষে বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দিতে হবে। চার সপ্তাহের মধ্যে সেই টাকা দিয়ে দিতে হবে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের।
তবে রাজ্য সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়ে বলা হয়, চার সপ্তাহ খুব কম সময়। কলকাতা হাইকোর্টও ৩ মাস সময় দিয়েছিল। অন্তত ৩ মাস সময় দিন। তাতে সম্মত হয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
অর্থাৎ রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা এখন যে ১৮ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছেন, তার বাইরে মহার্ঘ ভাতা বাবদ এরিয়ার তথা বকেয়ার ২৫ শতাংশ তিন মাসের মধ্যে দিতে হবে তাঁদের। মানে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুয়ায়ী এক লপ্তে অনেকগুলো টাকা পেতে পারেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা।
এখন কৌতূহলের বিষয় হল, এক- কবে থেকে এই ডিএ বকেয়া রয়েছে? (West Bengal DA Arrear)। দুই- বকেয়া ডিএ মেটাতে কত টাকা খরচ হবে রাজ্য সরকারের?
রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনের নেতা মলয় মুখোপাধ্যায় এদিন সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী রায় ঘোষণার পর দ্য ওয়ালকে বলেন, “এই ২৫ শতাংশ বকেয়া বড় কথা নয়। সরকারি কর্মচারী ও অন্যান্য আন্ডারটেকিংয়ের কর্মীদের জন্য যে ডিএ-র মান্যতা আদায় করে আনতে পেরেছি এটা বড় জয়”।
মলয়বাবুর কথায়, “এই বকেয়া ডিএ পঞ্চম বেতন কমিশন (West Bengal 5th Pay Commission) অনুযায়ী দেওয়া হবে। কারণ মামলাটা হয়েছিল পঞ্চম বেতন কমিশনের সময়ে। তখন ষষ্ঠ বেতন কমিশন ( West Bengal 6th Pay Commission) বাস্তবায়িত হয়নি। ষষ্ঠ বেতন কমিশন অনুসারে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে বেতনের ফারাক হল ৩৭ শতাংশ। কেন্দ্র ৫৫ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা দেয়। রাজ্য সরকার দিচ্ছে ১৮ শতাংশ”।
তিনি বলেন, “ষষ্ঠ বেতন কমিশন নিয়ে কোনও মামলা নেই। আমাদের মামলা পঞ্চম বেতন কমিশন নিয়ে। পঞ্চম বেতন কমিশনের ডিএ আইনি মান্যতা পাওয়া মানেই এবার ষষ্ঠ বেতন কমিশন আইনি মান্যতা পাবে। অগস্ট মাসে সুপ্রিম কোর্টে মামলার ফের শুনানির সময়ে তা উত্থাপন করব”।
মলয় মুখোপাধ্যায় জানান,“১ জুলাই ২০০৯ থেকে ১ জানুয়ারি ২০১৯ এই মেয়াদে উপভোক্তা ক্রয় সূচক (Consumer Price Index – CPI) অনুসারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হয়নি, সেটাই বকেয়া রয়েছে। যেমন বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ১ জুলাই ২০০৯ তারিখে যে ৬ শতাংশ ডিএ দেওয়ার কথা ছিল, তা ডিসেম্বর মাসে দেওয়া হয়। অর্থাৎ ৫ মাস পরে দিয়েছে। পরেরটা ৭ মাস পরে দিয়েছে। তার পরেরটা ১১ মাস পরে পেয়েছি”।
তিনি আরও জানান, “বামফ্রন্ট সরকার চলে যাওয়ার পর তৃণমূল সরকার আসে। তখন উপভোক্তা ক্রয় সূচক অনুযায়ী প্রথমে ১৮ মাস মহার্ঘ ভাতা বাড়ানো হয়নি। তার পর ২৪ মাস বকেয়া পাওয়া যায়নি। তার পর ৩৬ মাস। তার পর পাওয়া যায়নি ৪২ মাস। তার পর ৪৬ মাস। তার পরেরটা পাওয়া যায়নি ৫৪ মাস। সেই সব বকেয়া সরকারকে এবার মিটিয়ে দিতে হবে”।
রাজ্য সরকারের কর্মচারী ফেডারেশনের এই নেতা বলেন, “সরকারই বলেছিল, মোট বকেয়া ডিএ দিতে রাজ্যের ৪১ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। তার মানে তার এক চতুর্থাংশ অর্থাৎ ১০,২৫০ কোটি টাকা বকেয়া এখন মেটাতে হবে রাজ্যকে।