শেষ আপডেট: 12th December 2024 18:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশে ঘটে চলা অশান্তির সঙ্গে এ রাজ্যের নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুর আন্দোলনের তুলনা টানলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
অনেকের মতে, ২০০৬ সালে সিঙ্গুর এবং ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের জেরে বামদের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি নড়ে গিয়েছিল। তারই জেরে ২০১১ সালে ৩৪ বছরের বাম সরকারের অবসান ঘটে।
এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনে সেলিম বলেন, "নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুরের সময় যেমন দেশি বিদেশি শক্তি এক হয়েছিল, ষড়যন্ত্র করে ফেক আন্দোলন করা হয়েছিল। একইভাবে কোটা বিরোধী আন্দোলন দেখিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ক্ষ্যাপানো হয়েছিল। এখন সেটা স্পষ্ট হচ্ছে।"
সেলিমের দাবি, সিপিএম এটা আন্দাজ করেছিল বলেই কোটা বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়নি তাঁরা। বরং তখনই সিপিএমের তরফে এর নেপথ্যে বড় চক্রান্ত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক।
একই সঙ্গে অভিযোগ করেছেন, ২৬ এর ভোটে চট্টগ্রামকে পোস্টার বানিয়ে বাংলাদেশ বিদ্বেষের ওপর দাঁড়িয়ে কে কত বড় বাঙালিপ্রেমী তার কম্পিটিশন করবে বিজেপি, তৃণমূল। মানুষের দৈনন্দিন সমস্যাকে দূরে সরিয়ে মসজিদ, মন্দির তৈরির কম্পিটিশন চলছে।
এই মেরুকরণের ভোট ভাগাভাগিতেই তাঁকে এবং অধীর চৌধুরীকে লোকসভা ভোটে হারতে হয়েছে দাবি করে সেলিম বলেন, যুক্তি, তথ্যের পরিবর্তে ভোটকে ধর্ম কেন্দ্রিক আবেগে পরিণত করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আরএসএস আর জামাতের রাজনীতি একই বলে দাবি করে সেলিমের অভিযোগ, ধর্মের উস্কানি দিয়ে মানুষকে আরও উগ্র করার চেষ্টা চলছে। যে কারণে বলা হচ্ছে, বাবরি মসজিদের আদলে মুর্শিদাবাদে মসজিদ তৈরি হবে।
সেলিমের অভিযোগ, "সুপারি কিলারের মতো এখন সুপারি রাজনীতিবিদ পাওয়া যায়। এরা ধর্মের নামে মানুষের মধ্যে দ্বেষ তৈরি করে। দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক অন্যতম প্রধান দিক এটা।"
সেই সূত্রে প্রশ্ন উঠছে, মেরুকরুণের ঠেলায় সিপিএমকে কি আরও বিলুপ্তির পথে? কেনই বা আটকানো যাচ্ছে না এই রক্তক্ষরণ?
সেলিমের কথায়, "সিপিএমের রক্তক্ষরণ, এটা রাজনীতির কথা নয়। মিডিয়ার তৈরি করা কথা। এটা জোরকরে মানুষের মনে গেঁথে দেওয়া হচ্ছে।"
তবে সিপিএম যে ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু তা স্বীকার করে সেলিম বলেন, "সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়ে মানুষ। আর আমাদের যেহেতু মানুষ নিয়ে কারবার তাই আমরাও বিপদে পড়েছি। তবে মনে রাখতে হবে কমিউনিস্ট পার্টি লুপ্ত হলে মানুষের সম্প্রীতি, শান্তি, ঐক্য লুপ্ত হয়ে যাবে। ফলে যাঁরা সেটা চান না, তাঁর আমাদের লুপ্ত হতে দেবেন না।"
তবে একের পর এক নির্বাচনে সিপিএমের ভোট ব্যাঙ্কে ধস কমে যাওয়ার নেপথ্যে সিপিএমের সাংগঠনিক অক্ষমতা, নেতৃত্বর দুর্বলতার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন সেলিম। তাঁর কথায়, আমরা অনেকক্ষেত্রে মানুষকে বোঝাতে পারছি না।
এজন্য মিডিয়ার একাংশকেও দুষেছেন সেলিম। তাঁর কথায়, "আগে মিডিয়া খবর সরবরাহ করত। এখন ইনফরমেশন দেওয়ার পরিবর্তে কতগুলো শব্দ মানুষের মনে গেঁথে দেওয়া হচ্ছে। ফলে যেটা ঘটছে, সেটা ঠিকভাবে দেখানো হচ্ছে না। তার ওপর রয়েছে তৃণমূলের থ্রেট কালচার।"