শেষ আপডেট: 18th October 2024 20:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একুশে বাংলা দখলের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ২৪ এর লোকসভাতে ১৮ থেকে ১২ তে নামতে হয়েছে পদ্মশিবিরকে। ২৬ এ বাংলা দখল করতে হলে, তৃণমূলের আগে সিপিএমকে নির্মূল করতে হবে বলে জানিয়ে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুক্রবার সিঙ্গুরের সভা থেকে শুভেন্দু বলেন, " সিপিএম শুধু হিন্দু ভোট কাটছে। গত লোকসভা ভোটে বাংলার ৪২টি লোকসভার মধ্যে ১২টা লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএম হিন্দু ভোট কেটে বিজেপিকে হারিয়েছে। তাই তৃণমূলকে নির্মূল করার আগে সিপিএমকে নির্মূল করার দরকার আছে।"
নিজের দাবির সপক্ষে বিরোধী দলনেতার দাবি, "৫ শতাংশ হিন্দু ভোট কাটো আর তৃণমূলকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখো, সিপিএমের এই ব্যবসা এবার হিন্দুরাই বন্ধ করবে।"
এ প্রসঙ্গে গত লোকসভা ভোটের একাধিক আসনের ভোটের হিসেবও দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দুর দাবি, গত লোকসভা ভোটে যাদবপুরে সিপিএমের প্রার্থী সৃজন চক্রবর্তী ২ লাখ ৮১ হাজার ভোট পেয়েছেন। আর যাদবপুরে মোট হিন্দু ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৮০ হাজার। একইভাবে কৃষ্ণনগরে বামপ্রার্থী এম এস স্বাধ্বী ১ লাখ ৮২ হাজার ভোট পেয়েছেন, সেখানে মোট হিন্দু ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৮০ হাজার। হুগলিতেও সিপিএম হিন্দু ভোট কাটার কারণে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের পরিবর্তে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ী হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
টেনে এনেছেন নিজের খাসতালুক নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গও। একুশের বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। শুভেন্দু বলেন, "সিপিএমের নীচের তলার ভোটাররা চান রাজ্যে পরিবর্তন। আমি নন্দীগ্রামে সিপিএমের নীচুতলার ভোটারদের বুঝিয়েছি। যে কারণে এবারে নন্দীগ্রামের প্রায় আড়াই হাজার কমরেড বিজেপিকে ভোট দিয়েছে বলে নন্দীগ্রামে সিপিএমের ভোট কমে গিয়েছে।"
কর্মীদের উদ্দেশে শুভেন্দু বলেন, "সিপিএম হিন্দুদের ভোট কেটে তৃণমূলের সুবিধা করে দিচ্ছে। এটা মানুষকে বোঝানো দরকার।"
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এবারের লোকসভা ভোটে সংখাতত্ত্বের নিরিখে মোট ৪২টি আসনের মধ্যে বিজেপি গতবারের চেয়ে ৬টি আসন খুইয়ে ১২টিতে নামলেও ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের নিরিখে ১৩টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। বিধানসভায় বিজেপির প্রাপ্ত আসন সংখ্যা ছিল ৭৭টি। লোকসভার নিরিখে সেখানে ৯০টিতে এগিয়ে পদ্মশিবির।
অন্যদিকে ২২ থেকে তৃণমূল ২৯ টি লোকসভা আসনে জিতলেও বিধানসভার নিরিখে ২১৩ র পরিবর্তে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে ১৯২টিতে এগিয়ে। অর্থাৎ ২১টি আসনে শাসকদল পিছিয়ে রয়েছে।
শুভেন্দু বোঝাতে চেয়েছেন, যে প্রায় ৫ শতাংশ ভোটের জন্য তৃণমূল প্রতিটি ভোটে টেক্কা দিচ্ছে সেই হিন্দু ভোট বাম থেকে রামে ফেরাতে পারলেই বাংলা দখল সম্ভব। নন্দীগ্রামের উদাহরণ টেনে তাই অন্য এলাকারও সদস্যদের নীচুতলার বাম কর্মীদের বুজিয়ে বিজেপিতে আনার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
তবে ভোট প্রচারে তো বটেই ঘরোয়া আলোচনাতেও তৃণমূল-বিজেপির সেটিং তত্ত্ব আউড়ে থাকেন আলিমুদ্দিনের ম্যানেজাররা। শুভেন্দুর এদিনের মন্তব্যের পর সিপিএম নেতারা ফের ওই সেটিং তত্ত্বেই শান দেবেন নাকি নতুন কোনও সমীকরণের কথা বলবেন, তা নিয়েও কৌতূহল তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।