Advertisement
Advertisement
শেষ আপডেট: 4 December 2023 18:21
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: ১৫ বছর বয়সে যখন শ্বশুরবাড়িতে পা রেখেছিলেন, তখন শাশুড়ি নাকি ছিলেন আসন্নপ্রসবা। নিজের ছোট ছোট দেওর-ননদদেরও সন্তানস্নেহে পালন করেছিলেন। একান্নবর্তী সংসারে খাটনি যেমন ছিল, তেমনই ছিল আনন্দ। তাতেই মিলেমিশে কেটে গেছে টানা ৭০ টা বছর। কাটোয়ার একটি সংস্থার আমন্ত্রণে ৫০ বছরের দাম্পত্য জীবন পার করা যে ৩০ জন দম্পতি এসেছিলেন তাঁদের একজন গীতা ব্যানার্জি। নিজের ৭০ বছরের দাম্পত্যের নানা সুখ-অসুখের গল্প শোনালেন তরুণ প্রজন্মকে।
এখন নানা ছোটখাটো কারণে দাম্পত্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কেও অল্প দিনেই ইতি টানছে এই প্রজন্ম। সামাজিক ব্যাধির আকার নিয়েছে বিবাহ বিচ্ছেদ। সেখানে প্রবীণ ব্যক্তিরা কীভাবে পঞ্চাশ পেরিয়েও বিবাহিত জীবনকে অটুট রেখে চলছেন তারই সুলুক সন্ধান দিতে এই আয়োজন বলে উদ্যোক্তাদের দাবি। রবিবার কাটোয়ার নজরুল মঞ্চে আয়োজিত হয় এই অনুষ্ঠান, ‘পঞ্চাশ পেরিয়ে’। এখানে উপস্থিত দম্পতিদের কারও ৭০ বছরের বিবাহিত জীবন। কেউ একসঙ্গে পার করেছেন ৫০ বা ৫৫ বছর।
সানাইয়ের সুরে, ফুলের গন্ধে আগাগোড়াই অনুষ্ঠানে ছিল অন্যরকম আবহ। জীবন সঙ্গীর হাত ধরে অনুষ্ঠান স্থলে একে একে উপস্থিত হন এই প্রবীণ দম্পতিরা। অনুষ্ঠানকে মনোগ্রাহী করে তুলতে বিবাহের কিছু আচার অনুষ্ঠান পালন করা হল। ছোট ছোট খেলা, অল্প স্বল্প স্মৃতিচারণের মধ্যে দিয়ে পালিত হল পঞ্চাশ পেরিয়ে অনুষ্ঠান। এমন অভিনব অনুষ্ঠানের শরিক হতে পেরে খুবই খুশি প্রবীণ দম্পতিরাও। তাঁদের কথায় কথায় উঠে এল সেই সম্পর্কের কথা, যেখানে পরতে পরতে জড়িয়ে থাকে প্রেম, ভালোবাসা, দুঃখ, রাগ, মান-অভিমান, পাওয়া-না পাওয়ার যন্ত্রণা।
দাম্পত্য সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী পার করা নূর মহম্মদ শেখ বললেন, “আমি আর আমার স্ত্রী দুটো জান হলেও একই প্রাণ। এভাবেই তো কেটে গেল জীবন। ভালবাসাতেই তো থাকে মান-অভিমান। না থাকলে কী আর সম্পর্ক টেকে!” ৫০ বছরের বিবাহিত জীবন দুলালকুমার মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর অভিজ্ঞতা, “বর্তমানে পরিবারের বড়দের দখলদারির মনোভাবেও অল্পদিনের মধ্যেই সম্পর্ক ভেঙে চুরমার হচ্ছে। আধুনিক যুগে ইঁদুরদৌড়ের টানাপড়েনের ধকল সামলে তৃতীয় ব্যক্তির হস্তক্ষেপ মানতে পারছে না এই প্রজন্ম।”
উদ্যোক্তা রানা চট্টোপাধ্যায় জানালেন, বিয়ের মতো একটি পবিত্র সম্পর্ককে কীভাবে দীর্ঘজীবী করে রাখা যায় সেই পথের দিশা খুঁজতেই প্রবীণদের আহ্বান করা হয়। কেউ ৫০, কেউ ৭০ বছরের অভিজ্ঞতায় তরুণদের ঋদ্ধ করলেন তাঁরা।
Advertisement
Advertisement