আখতার আলি ও সন্দীপ ঘোষ।
শেষ আপডেট: 25th August 2024 11:25
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আরজি করে ডাক্তারি ছাত্রী খুনের সূত্র ধরেই সামনে আসছে হাসপাতালের একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ। সেই সূত্রেই আদালতের নির্দেশে রবিবার সকাল থেকে শহরজুড়ে অভিযানে নেমেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের আধিকারিকরা।
গত বছর জুলাই মাসে দুর্নীতি বিরোধী ব্যুরো, ভিজিল্যান্স কমিশন এবং স্বাস্থ্যভবনে আরজি করের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়েছিলেন আখতার আলি। জানা যাচ্ছে, সেই সূত্রেই সামনে এসেছে আরজি কর মেডিক্যালের দুর্নীতি।
ঠিক কী কী অভিযোগ রয়েছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে?
আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার, বর্তমানে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজের ডেপুটি সুপার আখতার আলির দাবি, "নিজের দুর্নীতির রাজত্ব টিকিয়ে রাখতে সন্দীপ ঘোষ হাসপাতালটাকে শুড়ি খানা বানিয়ে ছিলেন। হাসপাতালের গেস্ট হাউসে ছাত্রদের মদ্যপান করাতেন। হাসপাতালের যে কোনও কাজের টেন্ডারে ২০ শতাংশ করে নিতেন। এমনকী ক্যান্টিন, স্টল, সুলভ শৌচালয়গুলিকে টাকার বিনিময়ে অন্যদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।"
শুধু তাই নয়, হাসপাতালের ব্যবহৃত সরঞ্জামেও বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজের ডেপুটি সুপার আখতার আলির অভিযোগ, "একদিন অন্তর হাসপাতালের ব্যবহার হয়ে যাওয়া সিরিঞ্জ, স্যালাইনের বোতল, রবার গ্লাভস, হ্যান্ড গ্লাভস- সহ বিভিন্ন বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য মিলিয়ে প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি মাল বেরোত। এগুলোতেও দুর্নীতি করতেন সন্দীপ ঘোষ। একটা ব়্যাকেট বানিয়ে নিয়েছিলেন, তাতে যুক্ত ছিলেন দু'জন বাংলাদেশিও। তাঁরা এখান থেকে মালগুলো বাংলাদেশে নিয়ে যেত রিসাইকেল করার জন্য।"
ভিজিল্যান্স কমিশনে আখতার আলির অভিযোগ পত্র।
এখানেই শেষ নয়! আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপারের আরও অভিযোগ, "ওই সময় আমরা কয়েকজন এটা নিয়ে চিৎকার করাতে চাপে পড়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলেন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। আমিও ছিলাম তদন্ত কমিটিতে। যেদিন আমরা তদন্ত রিপোর্ট জমা দিলাম, সেদিনই আমি বদলি হয়ে গেলাম। পরে তদন্ত কমিটির বাকি দু'জনকেও বদলি করে দেয়। সেই রিপোর্ট আজও সামনে আসেনি।"
ইতিমধ্যে ডাক্তারি ছাত্রী খুনের ঘটনা নিয়ে প্রশ্নের মুখে সন্দীপ ঘোষ। অভিযোগ, খুনের ঘটনাকে ধামাচাপা দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। নির্যাতিতার পরিবার এ ব্যাপারে সরাসরি এও অভিযোগও করেছেন, যে সম্ভবত হাসপাতালের কোনও দুর্নীতি মেয়ে জেনে ফেলেছিল বলেই হয়তো তাঁকে এভাবে হত্যা করা হল। তদন্তে সম্ভাব্য সবদিকই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
এমনকী মর্গ থেকে লাশ পাচারের অভিযোগও রয়েছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে। তদন্তে তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।