বাঘিনির কনভয়, ইনসেটে জিনাতের গাড়ি।
শেষ আপডেট: 30th December 2024 21:44
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাঁকুড়া বন দফতরের কর্মীদের চোখে, মুখে যুদ্ধজয়ের মেজাজ!
হবে নাই বা কেন! ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া যা পারেনি, তাই করে দেখিয়েছে বাঁকুড়া। দেড় দিনের মধ্যে বাঘিনিকে 'খাঁচাবন্দি' করার সাফল্য নিয়ে সোমবারও গর্বিত তাঁরা। একান্ত আলাপচারিতায় গর্বের সঙ্গে সেকথা বলছেনও তাঁরা!
সেলিব্রিটি জিনাত! রাজকীয়ভাবে আনা হল কলকাতায় #TigerJeenat #Kolkata #TheWallNews #TigerRescue pic.twitter.com/YQE4NdSdRC
— The Wall (@TheWallTweets) December 30, 2024
রবিবার বিকেলেই রানিবাঁধের গোসাঁইডিহি এলাকায় ঘুমপাড়ানি গুলিতে জব্দ করা হয় বাঘিনিকে। পরে ২০টি গাড়ির কনভয়ে করে রীতিমতো রাজকীয়ভাবে জিনাতকে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়। আপাতত আলিপুর চিড়িয়াখানায় চিকিৎসা চলছে তাঁর। তবে সোমবারও বাঁকুড়ার বিভিন্ন মোড়ের জটলায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে বাঘিনি জিনাত!
বাসিন্দারা বলছেন, সাম্প্রতিক অতীতে এমন কনভয় দেখেননি তাঁরা। রসিকতার সুরে কেউ কেউ বলছেন, 'কনভয়ে গাড়ির সংখ্যায় মন্ত্রীদেরও টেক্কা দিল জিনাত!' বস্তুত, রাজ্য কিংবা কেন্দ্রের মন্ত্রীদের কনভয়ে সামনে পিছনে মিলিয়ে সাকুল্যে ৪ থেকে ৬টি গাড়ি থাকে। সেখানে জিনাতের কনভয়ে কিনা ২০ টি গাড়ি!
রবিবার বিকেলে বাঁকুড়া থেকে বাঘিনি জিনাতকে কলকাতায় নিয়ে আসার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, কনভয়ের ৬ নম্বর গাড়িটিতে রয়েছে খাঁচা। তাতেই বন্দি জিনাত। সামনে পাঁচটি এবং পিছনে আরও ১৪টি গাড়ি, হরেক রকমবা গাড়ির লম্বা সারি! রাস্তার দু'ধারে ভিড় করে জিনাতের সেই কনভয় দেখেছেন জঙ্গলমহলের বাসিন্দারা।
রবিবার বিকেলে ঘুম পাড়ানি গুলি খাওয়া জিনাতকে খাঁচায় তোলার সময়ও সে প্রতিরোধের শেষ চেষ্টা করেছিল। হাতে, পায়ের দড়ি খুলতেই সে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। এক বনকর্মীর কথায়, "খাঁচার দরজা লাগাতে আর এক সেকেন্ডে দেরি হলে রবিবারই আবার অঘটন ঘটে যেতে পারত! ঘুমপাড়ানি গুলির ঘোর থাকা সত্ত্বেও জিনাত হালুম হালুম গর্জন ছেড়েছে।" কনভয়ে করে নিয়ে আসার সময়ও রাস্তায় একাধিকবার অনেকেই জিনাতের সেই হালুম গর্জন শুনতে পেয়েছেন।
গত ২০ ডিসেম্বর ওড়িশা থেকে ঝাড়গ্রামে প্রবেশ করেছিল জিনাত। পরের দিন রাতে সে পৌঁছেছিল বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ে। টানা সাতদিন সেখানে ঘাঁটি গেড়ে থাকার পর গত শুক্রবার অবস্থান বদলে ঢুকে পড়েছিল মানবাজারে। সেখান থেকে শনিবার ভোরে জিনাত পোঁছে যায় বাঁকুড়ায়। তারপরই 'খেলা শেষ'। আপাতত, আলিপুর চিড়িয়াখানার হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বাঘিনি এই মুহূর্তে সুস্থ। শীঘ্রই তাঁকে গভীর জঙ্গলে ছাড়া হবে। তবে সেটি কোন জঙ্গল, তা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।