শেষ আপডেট: 23rd September 2023 08:20
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সংসদের নতুন ভবন নিয়ে ঢাকঢোল পেটানো কম হল না। কংগ্রেসের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) উদ্দেশ্য কী ছিল তা এখন জলের মতই স্বচ্ছ। জয়রাম রমেশদের (Congress Leader Jairam Ramesh) কথায়, “এই মোদী মাল্টিপ্লেক্সে (New Parliament Building) দম বন্ধ লাগছে। রাজ্যসভা ও লোকসভার মধ্যে যে সহজ সমন্বয় ছিল পুরনো সংসদ ভবনে তা নতুন ভবনে গোলকধাঁধায় হারিয়ে গিয়েছে। কোনও স্থাপত্য যদি গণতন্ত্রকে হত্যা করতে সফল হয়, তাহলে বুঝতে হবে নতুন করে সংবিধান না লিখেও মোদী তাতে সফল হয়েছেন”।
ভারতীয় গণতন্ত্রের এই নয়া পীঠস্থানকে বৃহস্পতিবার সাত তারা হোটেল বলে কটাক্ষ করেছিলেন সপা সাংসদ জয়া বচ্চন। প্রবীণ সাংবাদিক থেকে শুরু করে দল নির্বিশেষে বহু সাংসদ নতুন পার্লামেন্ট ভবনকে নিষ্প্রাণ বলতে শুরু করেছে। জয়রামের কথায়, নতুন ভবন এমনই যে পরস্পরকে দেখতে বাইনোকুলার লাগবে। পুরনো ভবনের ঐতিহ্য ছিল শুধু তা নয়, সেখানে পারস্পরিক আলোচনার অপার সুযোগ ছিল। গণতন্ত্রের মেরুদণ্ডই হল আলোচনা ও বিতর্ক।
পুরনো সংসদ ভবনের অলিন্দ বা লবি যাঁরা ঘুরে দেখেননি তাঁদের কাছে এই ফারাক বোঝা সম্ভব নয়। আসলে পুরনো ভবনের অলিন্দ ও লবি ছিল যেন এক মিলনক্ষেত্র। দেখা যেত, অলিন্দের ইতি উতি সাংসদরা নিজেদের মধ্যে কথা বলছেন। বা দোতলার বারান্দায় এক কাপ চা হাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন।
নতুন ভবনে সেই সব সুযোগ কম। প্রশস্ত করিডর এমন ভাবে সাজানো যে বাকি সব কিছু কেমন আড়ষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন রাজনীতিক ও সাংবাদিকদের অনেকেই।
জয়রামের কথায়, এটা শুধু আমার মত নয়, বিজেপির অনেক সাংসদও তাই মনে করেন। সংসদ ভবনের কর্মীদের বেশিরভাগেরই মত তাই। এই ভবন দেখে কেবল তাঁরাই আহা আহা করতে পারেন, যাঁরা জনগণের থেকে বিচ্ছিন্ন।
পর্যবেক্ষকদের মতে, পুরনো ভবন হল নেতা, সাংবাদিক, আমলাদের কাছে বহুদিনের এক অভ্যাস। তার প্রতিটা ঘর, অলিন্দ, লবি, সেন্ট্রাল হল, উঠোন, গান্ধী মূর্তির পাদদেশ মায় একটা ছন্দ রয়েছে। পরতে পরতে লেগে রয়েছে ইতিহাস। সেই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসা মুশকিল। জয়রামদের নতুন ভবন স্বাভাবিক কারণেই যান্ত্রিক মনে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মুসলিম এমপিকে ‘আতঙ্কবাদী’ বলা বিজেপির রমেশ দলের ‘সম্পদ’, আগেও ফাউল করেছেন বিস্তর