দ্য ওয়াল ব্যুরো : বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাওসাহেব দানভে মন্তব্য করেছিলেন, দিল্লিতে কৃষক আন্দোলনের পিছনে আছে পাকিস্তান ও চিন। বৃহস্পতিবার শিবসেনার রাজ্যসভা সদস্য ও প্রধান মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত বলেন, "মন্ত্রীর কাছে যদি খবর থাকে চিন ও পাকিস্তান কৃষকদের উস্কানি দিচ্ছে, তাহলে অবিলম্বে ওই দু'টি দেশে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করা উচিত।" পরে তিনি বলেন, "অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সেনাবাহিনীর কর্তাদের বৈঠকে বসা উচিত।"
বুধবার মহারাষ্ট্রের জলনা জেলায় এক জনসভায় দানভে বলেন, "দিল্লিতে যে আন্দোলন চলছে, তাতে চাষিদের কোনও স্বার্থ নেই। এর পিছনে চিন ও পাকিস্তানের হাত আছে।" পরে তিনি বলেন, "প্রথমে আমাদের দেশের মুসলিমদের উত্তেজিত করার চেষ্টা হয়েছিল। তাদের বলা হল, এনআরসি আসছে। ছ'মাসের মধ্যে তাদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। একজনও মুসলিমকে কি দেশ ছাড়তে হয়েছে?"
দানভে বলেন, "মুসলিমদের উত্তেজিত করার চেষ্টা সফল হয়নি। এখন কৃষকদের বলা হচ্ছে, নতুন আইন হলে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।"
কিছুদিন আগে হরিয়ানার কৃষিমন্ত্রী জে পি দালালও বলেছিলেন, চিন ও পাকিস্তানের উস্কানিতে দিল্লিতে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দিল্লির শিখ গুরুদোয়ারা ম্যানেজমেন্ট কমিটি বলল, আন্দোলনকারীদের অপমান করেছেন মন্ত্রী। কমিটির সভাপতি এস মনজিন্দর সিং সিরসা বলেন, কৃষকরা দেশবিরোধী বা নৈরাজ্যবাদী নন। তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছেন।
বুধবার এস মনজিন্দর সিং সিরসা বলেন, "কৃষকরা অনেকে দেশের জন্য লড়াই করেছেন। মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁরা খাদ্য উৎপাদন করেন। তাঁদের দেশবিরোধী বলা ঠিক নয়।"
কেন্দ্রীয় সরকারের বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিল করার দাবিতে গত ১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কৃষকরা। দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে কয়েক হাজার কৃষক অবস্থান করছেন। মঙ্গলবার কৃষক সংগঠনগুলির ডাকে পালিত হয়েছে ভারত বন্ধ। এদিনই সন্ধেবেলা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন কৃষকরা। কিন্তু তারপরেও সমাধান সূত্র বের হয়নি। কারণ দু’তরফই নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল। সরকারের তরফে বলা হয়েছে, তাঁরা কৃষি আইনে কিছু সংশোধনী আনতে পারেন। কিন্তু কৃষকরা চান আইনের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার। তাই কোনও সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না।
বুধবার কৃষক সংগঠনগুলির নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে কৃষক আন্দোলন হয়ে উঠবে আরও তীব্র। দিল্লি-জয়পুর হাইওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হবে, রিলায়েন্সের মল বয়কট করা হবে এবং দখল করা হবে বিভিন্ন টোল প্লাজা। আন্দোলনকারী চাষিদের উদ্দেশে লিখিত প্রস্তাব পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বলেছিল, নতুন কৃষি আইন সংশোধন করা হবে। কী কী সংশোধন করা হবে তাও জানানো হয়েছিল। কিন্তু কৃষকরা সেই প্রস্তাব একবাক্যে নাকচ করে দিয়েছেন।