শেষ আপডেট: 6th January 2025 17:21
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একটা সময় রাজ্যে হাতির সংখ্যা কমতে কমতে পঁচাত্তরে এসে ঠেকেছিল। বন দফতরের হিসেব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সেই সংখ্যাটা প্রায় ৮০০! শুধু তাই নয়, যেভাবে চক্রাকারে হাতির সংখ্যা বাড়ছে তাতে হস্তীকূলের প্রজননে এখনই লাগাম না টানতে পারলে আগামীদিনে সংখ্যাটা বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে যাবে বলে মনে করছেন বন দফতরের কর্তারা।
এবার এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সোমবার গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে হাতি সম্পর্কে কেন্দ্রের কোনও পরিকল্পিনা না থাকা নিয়ে নাম না করে মোদী সরকারকে দুষেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, "বন্য জন্তুদের আমরা ভালবাসি। তাদের প্রোটেকশনও দেওয়া হয়। কিন্তু মনে রাখবেন, মানুষের জীবনের দাম আছে। মানুষের জীবনের দাম থাকবে না, এটা হতে পারে না। অনেকে এক তরফা বলে, আমি দু তরফা বলি।"
আক্ষেপের সুরে মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, "এমনিতেই হাতির সংখ্যা খুব বেড়ে গেছে। এগুলো আমাদের ফেস করতে হচ্ছে।" 'হাতি নিয়ে নানা দেশে নানা পরিকল্পনা হচ্ছে' বলে নাম না করে কেন্দ্রকেও বিঁধেছেন মমতা।
প্রসঙ্গত, হাতির জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঠেকাতে ইতিমধ্যে নিবীর্যকরণে জোর দিতে রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে দু দু'বার চিঠিও লিখেছেন বনমন্ত্রী। কিন্তু এ ব্যাপারে কেন্দ্রর কাছ থেকে কোনও সদুত্তর মেলেনি বলে সম্প্রতি দ্য ওয়ালকে জানিয়েছেন বীরবাহা। বনমন্ত্রীর কথায়, "একদিকে লাফিয়ে লাফিয়ে হাতির প্রজনন বাড়ছে অন্যদিকে প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ও প্রতিবেশী দেশ নেপাল থেকে বছরভরই হাতি ঢুকছে রাজ্যে। এর ফলে জঙ্গল লাগোয়া লোকালয়ে বাড়ছে হাতির হামলার ঘটনাA। হাতির প্রজননে রাশ টানতে কেন্দ্রকে দু'বার চিঠিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে এখনও কেন্দ্র কোন পদক্ষেপ করেনি।"
এদিন পরোক্ষে সেই প্রসঙ্গটি বোঝাতে চেয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, যেহেতু গঙ্গাসাগর মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান তাই মুখ্যমন্ত্রী হয়তো এই মঞ্চ থেকে বিস্তারিত না বললেও বিষয়টি ছুঁয়ে গিয়েছেন। বনমন্ত্রীর পাঠানো চিঠি সম্পর্কে সম্ভবত পরোক্ষে কেন্দ্রকে বার্তা দিলেন। এরপরও কেন্দ্র কোনও পদক্ষেপ না করলে আগামী দিনে এ প্রসঙ্গে নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী বড় হুঁশিয়ারি দিতে পারেন বলেও মত সংশ্লিষ্ট মহলের।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হাতির জনসংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে এক এক সময় জঙ্গলের খাবার কমে গেলে ওরা গ্রামে চলে আসে। মমতা এও বলেন, হাতি ধান খেতে খুব ভালবাসে। সেজন্য মাঝেমধ্যেই গ্রামে হানা দেয়। মাঝেমধ্যে পথ চেঞ্জ করে রাস্তাতেও চলে আসছে। এগুলো বনকর্মীদের ভাল করে সামলাতে হয়।
এরপরই জঙ্গল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করে মমতা বলেন, "আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা করছি। তবু আর একটু সজাগ থাকতে হবে।"